I will do Data entry work
Hey
I am Abdullah
I am a professional in data entry services.
I will be working on an online marketplace.
My services:
1. Data Collection
2. Data entry
3. Copy and paste
4. Typing in Excel or Word
5. JPEG to Excel or Word
6. PDF to Excel or Word
7. File conversion
8. Web research
9. Lead Generation
10. Email and Product List
Order Now: https://www.fiverr.com/abdullah547661/do-any-type-of-data-work
দুপচাঁচিয়া উপজেলা সম্পর্কে
দুপচাঁচিয়া উপজেলা।
দুপচাঁচিয়া (ইংরেজি: Dupchanchia) বাংলাদেশের বগুড়া জেলার একটি
প্রশাসনিক এলাকা; যেটি পূর্বে "ধুপচাঁচিয়া"
নামে পরিচিত ছিল। এটি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের বগুড়া-৩ আসনের অন্তর্গত।
বগুড়া সদর থেকে দুপচাঁচিয়া উপজেলা
সদরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এর মোট আয়তন ১৬২.৪৫ বর্গ কিলোমিটার এবং
দুপচাঁচিয়া পৌরসভার আয়তন প্রায় ১০.৯৩ বর্গ কিলোমিটার। এর পূর্ব পাশ দিয়ে নাগর
নদী বয়ে গেছে। দুপচাঁচিয়া বগুড়া জেলার অন্যতম বড় একটি উপজেলা। দুপচাঁচিয়া এর
উত্তরে- জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলা, দক্ষিণে- বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলা ও কাহালু উপজেলা, পুর্বে-জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর
উপজেলা এবং বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলা, পশ্চিমে-জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা ও বগুড়া জেলার আদমদীঘি
উপজেলা।
দুপচাঁচিয়া পৌরসভা ২০০০ সালে
প্রতিষ্ঠা লাভ করে। যা নয়টি ওয়ার্ড ও আটত্রিশটি মহল্লার সমন্বয়ে গঠিত।
দুপচাঁচিয়া পৌরসভা ছাড়াও তালোড়া পৌরসভা নামে আরও আরও একটি পৌরসভা ২০১২ সালে
গঠিত হয়। এছারাও এই উপজেলার অন্তর্গত ৬ টি ইউনিয়ন, ১১৫ টি মৌজা এবং ২৩০ টি গ্রাম আছে। পোস্ট অফিস আছে ১১ টি।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী
দুপচাঁচিয়া উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৪,৪৬,২৬৩ জন।[১] যার ১,৬০,৮৯৪ জন পুরুষ ও ১৭৯,২৯০
জন নারী। প্রতি কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৯৯০ জন। দুপচাঁচিয়া উপজেলার মোট ভোটার
সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬১ হাজার ৮১৯ জন ও মহিলা
ভোটার ৬৩ হাজার ৮৭০ জন।
"দুপচাঁচিয়া" নামটির উৎপত্তি
সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন ধারণা পাওয়া যায় না। জনশ্রুতি আছে যে এখানে নাকি
একসময় প্রচুর "ধুপ" উৎপন্ন হত। অনেকে বলেন সেই "ধুপ" হতেই
"ধুপচাঁচিয়া" নামের সৃষ্টি। আবার অনেকে বলেন এককালে হিন্দু প্রধান
এলাকা হিসাবে এখানে প্রচুর ধোপা শ্রেণির লোক বাস করত। এই ধোপা কথাটি থেকেই
কালক্রমে এই এলাকার নামকরণ হয়েছে ধোপচাঁচিয়া। এছাড়াও প্রচলিত আছে এখানে একসময়
"ধূপছায়া" নামে একধরনের শাড়ি পাওয়া যেত। যা দেশে বিদেশে অনেক বিখ্যাত
ছিল। সেই ধূপছায়া হতে "ধুপচাঁচিয়া" নামের উৎপত্তি, যা পরবর্তীতে
"দুপচাঁচিয়াতে" পরিবর্তিত হয়েছে।[২]
দুপচাঁচিয়া পুলিশ থানার কার্যক্রম
১৮৮০ সালে শুরু হয়। দুপচাঁচিয়া থানাটি ১৯৮৩ সালের ১২ ডিসেম্বর বগুড়া জেলার
মধ্যে প্রথম পর্যায়ে উপজেলায় উন্নীত হয়। পরবর্তীতে ২০০০ সালের ২০ এপ্রিল
স্থানীয় সরকার মন্ত্রলায়ের আদেশ বলে দুপচাঁচিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়।
দুপচাঁচিয়া উপজেলাতে সরঃ প্রাথমিক
বিদ্যালয় আছে ৮৪ টি[৩], মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ২৬ টি, মাদ্রাসা আছে ২৬ টি, কলেজ আছে ৮ টি[৪]। দুপচাঁচিয়াতে
বর্তমানে শিক্ষার হার ৫৬.৫%।
দুপচাঁচিয়া উপজেলাতে মোট জমির পরিমাণ
২৪,০৫৪ হেক্টর। এতে মোট ফসলী জমির পরিমাণ
৫৫,৬৯০ হেক্টর। অধিকাংশই দুই ফসলী জমি বা
তিন ফসলী জমি। জমিতে সেচ দেয়ার জন্য গভীর নলকূপ আছে ৫৬৭ টি এবং অ-গভীর নলকূপ আছে
৬৯৯ টি। এ উপজেলাতে বাৎসরিক মোট ১,৩২,০০০মে: টন খাদ্য উৎপাদিত হয় যেখানে
বাৎসরিক খাদ্য চাহিদা ৩৭,৯৯০মেঃ টন। উদ্ধৃত খাদ্য রাজধানী
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।
২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এ
উপজেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৪৪%, ব্যবসা ১৩.৮৪%,
চাকরি ৪.৪৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭৭%, শিল্প ০.৭৪%, নির্মাণ ০.৬৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬৫% এবং
অন্যান্য ৬.৩৯%। এখানকার প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল, বিস্কুট, মাছ ও দুধ। [৫] অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পণ্যঃ
কৃষিপণ্যঃ দুপচাঁচিয়া উপজেলার
কৃষিপণ্যকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। খাদ্যশস্য জাতীয়- ধান, গম, আলু, সরিষা। শাক সবজি- লাউ, শিম, লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালং শাক, ঢেঁড়স, ডাটা শাক, সজিনা, বরবটি, কচু। মসলা- পিঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, মরিচ।
খোলাশ খেলনা শিল্পঃ উপজেলার আড়াই কিঃ
মিঃ উত্তরে ঐতিহাসিক ধাপসুলতানগঞ্জ হাটের পরেই খোলাশ গ্রাম। এ গ্রামের মোন্না
পাড়ায় বহু পরিবার খেলনা শিল্পের সাথে জড়িত। শুরুতে এখানে টমটম, ঘিরনি সহ ৭/৮ ধরনের খেলনা তৈরি হত।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্লাস্টিক খেলনা তৈরিতে জড়িয়ে পড়েছে এসব শিল্পীরা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে এ এলাকার খেলনার কদর রয়েছে।
এলুমিনিয়াম ফ্যাক্টরিঃ তালোড়ায় ১৯৫৪
সালে উত্তর বঙ্গের প্রথম এলুমিনিয়াম ফ্যাক্টরি স্থাপিত হয়। লাদুরাম আগারওয়ালা
নামে এক মারোয়ারী খেতওয়াত এলুমিনিয়াম ফ্যাক্টরি চালু করেন। পরবর্তীতে আরও বেশ
কয়েকটি এলুমিনিয়াম ফ্যাক্টরি এখানে গড়ে উঠে। এসব ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত মালামাল
উত্তরবঙ্গ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সমাদৃত।
মিল-চাতালঃ উত্তরবঙ্গের মধ্যে
দুপচাঁচিয়া উপজেলার চাল প্রসিদ্ধ। এ উপজেলার চাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন
মোকামে সুনামের সাথে বিক্রি হয়। এ উপজেলায় ৫ শতাধিক চাতাল ও চাউলকল স্থাপিত রয়েছে।
উপজেলা সদর, তালোড়া, চৌমুহনী ও সাহারপুকুরে এ ধরনের মিল চাতাল বেশী।
তাঁত শিল্পঃ দুপচাঁচিয়া উপজেলার তাঁত
শিল্পের ইতিহাস বহু পুরাতন। দুপচাঁচিয়া থানা সৃষ্টির অনেক আগে তাঁত শিল্প গড়ে
উঠেছিল। তাঁত শিল্পের তৈরি ধূপছায়া নামক শাড়ি এ অঞ্চলে প্রসিদ্ধ ছিল। কালক্রমে
ধূপছায়া শাড়ীর নাম থেকেই দুপচাঁচিয়া নামকরণ করা হয়েছে বলে কথিত আছে। পরে তাঁত
শিল্পের বিলুপ্তি ঘটে। এ তাঁত সূত্র ধরেই উপজেলার দেবখন্ড তাঁতিপাড়া, নলঘড়িয়া, ডাকাহার গ্রাম, তারাজুন গ্রাম, চান্দাইল গ্রাম, নূরপুর গ্রাম, নওদাপাড়া, ফুটানিগঞ্জ গ্রামের প্রায় ৩ শত পরিবার
এ তাঁত শিল্পের সাথে জড়িত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। এসব তাঁত শিল্পের উৎপাদিত
পণ্যের মধ্যে গায়ের চাদর,
গামছা, লুঙ্গি, বিছানার চাদর উল্লেখযোগ্য।
মৎস্য চাষঃ দুপচাঁচিয়া উপজেলায়
প্রায় ৩,৫০০ টি পুকুর ও ৪৪৬ টি জলাশয় রয়েছে।
উপজেলার খাস পুকুরগুলো সরকারীভাবে লিজ দিয়ে মাছ চাষ করা হয়। এছাড়াও ব্যক্তিগত
পর্যায়ে পুকুরগুলোকে ব্যবসায়ের কেন্দ্র হিসেবে ব্যাপকভাবে মাছ চাষ করা হয়।
উপজেলার অধিকাংশ পুকুর ও জলাশয়ে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প,
পাংগাস মাছ
ব্যাপকহারে চাষ করা হয়ে থাকে। ব্যাপকভাবে মাছ চাষ বিস্তার লাভ করায় মাছের পোনার
চাহিদা পূরণের জন্য অনেক মৎস্য বীজাগার অত্র এলাকায় গড়ে উঠেছে।
গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী পালনঃ ২০০৬
সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী উপজেলা পশু পালন অফিস সূত্রে জানা যায় গরুর সংখ্যা
২৭১৫০ টি, মহিষের সংখ্যা ৩১২০ টি, ছাগলের সংখ্যা ২৪,৭৮৬ টি, ভেড়ার সংখ্যা ৫২৪২ টি, মোরগ-মুরগীর সংখ্যা ৪৫,৬৮২ টি, হাঁসের সংখ্যা ৪৮৩০২ টি। উপজেলায় ২৬
টি ডেইরী ফার্ম ও ২৯ টি মুরগীর ফার্ম গড়ে উঠেছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলাতে সরকারী ও
বেসরকারী মিলেয়ে ব্যাংকের সংখ্যা ১১টি।
দুপচাঁচিয়াতে সরকারী হাসপাতাল ও
কমিউনিটি ক্লিনিক এর পাশাপাশি বেশ কিছু ক্লিনিক বেসরকারীভাবে গড়ে উঠেছে। বর্তমানে
দুপচাঁচিয়া উপজেলাতে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে ০১টি, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কেন্দ্র আছে
০৪টি, কমিউনিটি ক্লিনিক আছে ২৪টি এবং
বেসরকারী ক্লিনিক আছে ০৮ টি। বগুড়া জেলার সবচেয়ে বড় হাট "ধাপের হাট"
এই দুপচাঁচিয়াতেই অবস্থিত। এছারাও আরও ছোট-বড় ২১ টি হাট-বাজার আছে।[১]
বগুড়া সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
বগুড়া
দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানী ও
উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত এক ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন জনপদ। প্রাচীন
পুন্ড্র রাজ্যের রাজধানী পুন্ড্রবর্ধনই হচ্ছে বর্তমান বগুড়া জেলা। মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন প্রভৃতি রাজাদের প্রশাসনিক কেন্দ্র
ছিল প্রাচীন জনপদ বগুড়া। রাজশাহী বিভাগ-এর অন্তর্গত এই জেলার
সুদীর্ঘ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিবেচনা করে জেলা ব্রান্ডিং হিসেবে বেছে নেয়া
হয়েছে ঐতিহাসিক পুণ্ড্রনগর মহাস্থানগড়কে।
বগুড়া জেলার নামকরণের ইতিহাস
• বগুড়া নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক ঘাঁটাঘাঁটি
করে জানা যায় ১২৮১-১২৯০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লরি সুলতান গিয়াসউদ্দীন বলবনের ২য় পুত্র
সুলতান নাসিরউদ্দীন বগরা খান বাংলার শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। তাঁর নামানুসারে বগুড়া
জেলার নামকরণ করা হয়েছে। তার মানে, বগুড়া জেলার আরেকটি নাম হল “বগরা” । সুলতান নাসির উদ্দিন বগরা ১২৭৯ থেকে ১২৮২ পর্যন্ত বগুড়া অঞ্চলের শাসক
ছিলেন।
• আরেকটি মত হল, বঙ্গদেশের
দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের স্থানিক নাম ছিল ‘বগ্ড়ী’। সেটা রাজা বল্লাল সেনের আমল। সেই আমলে বঙ্গদেশকে পাঁচ ভাগে বিভক্ত
করা হয়েছিল। বঙ্গ, বরেন্দ্র, মিথিলা,
বাঢ় ও বগ্ড়ী। শেষোক্ত ‘বগ্ড়ী’ অংশে নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী ‘বাগিদ’দের সংখ্যাগুরুত্ব ও অধিক শক্তিমত্তা ছিল। এই বাগদি শব্দটিই অপভ্রংশ ‘বগ্ড়ী’ রূপ ধারণ করতে পারে। কালে রূপান্তরিত
এই ‘বগ্ড়ী’ই ‘বগুড়া‘ উচ্চারণে স্থির হয়েছে বলে একটি
ধারণা রয়েছে। তবে এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ বগুড়ার অবস্থান বঙ্গদেশের
দক্ষিণ-পশ্চিমে নয়।
বগুড়া জেলার ইতিহাস
১৮২০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত উত্তর
বঙ্গের এই অঞ্চলটি প্রশাসনিকভাবে রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলা হিসেবে পরিচিত ছিল। এই
তিনটি জেলাই ছিল আয়তনে বিশাল। প্রশাসনিক সুবিধার জন্য ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী
জেলা থেকে আদমদিঘি শেরপুর নৌখিলা ও বগুড়া থানা, রংপুর
জেলা থেকে দেওয়ানগঞ্জও গোবিন্দগঞ্জ থানা দিনাজপুর জেলা থেকে লালবাজার, ক্ষেতলাল ও বদলগাছি থানা নিয়ে বগুড়া জেলা গঠিত। এই সময় এই জেলার প্রশাসক হিসেবে জন্য একজন জয়েন্ট
ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়।১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়া জেলার প্রায় অর্ধাংশের রাজস্ব
সংগ্রহের জন্য এই জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে ক্ষমতা দেওয়া হয়।
১৮৩৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী জেলার
রায়গঞ্জথানা বগুড়া জেলার অধীনে আনা হয়। এই
পদ্ধতিতে বগুড়ার রাজস্ব আদায় সুসম্পন্ন করায় ব্যাঘাতের সৃষ্টি হয়। তৎকালীন বগুড়ার
পূর্ব-প্রান্তের ব্রহ্মপুত্র নদের পার্শ্ববর্তী ৮০ মাইলের ভিতরের সকল জমিদারের
খাজনা বোয়ালিয়ার সরকারী কোষাগারে জমা হতো। আবার তৎকালীন বগুড়া শহর থেকে ১২ মাইল
দূরের দাওকোবার রাজস্ব জমা হতো ময়মনসিংহের সরকারি কোষাগারে। জমিদারদের রাজস্ব জমার
অসুবিধার জন্য, কিছুদিনের জন্য নিয়ম করা হয়েছিল যে,
জমিদাররা, বোয়ালিয়া, বগুড়া ও ময়মনসিংহের যে কোনো রাজস্ব অফিসে তাদের রাজস্ব জমা দিতে পারবে।
এই নিয়ম প্রচিলত হওয়ার পর দেখা গেল, স্থানীয় অধিকাংশ
জমিদার বগুড়া কোষাগারে রাজস্ব জমা দিচ্ছে। রাজস্ব আদায়ের এই বিষয়টি বিবেচনা করে,
১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দে রংপুর, দিনাজপুর,
পাবনা, ময়মনিসংহ ও রাজশাহী জেলা থেকে
৫৪৯টি জমিদারি বগুড়া কালেক্টরের অধীনে আনা হয়। উল্লেখ্য এর আগে বগুড়ার অধীনে২৮৭টি
জমিদারি ছিল। এরফলে বগুড়ার প্রশাসনিক আয়তন বৃদ্ধি পায়। ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দে
ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পরিবর্তনের ফলে দাওকোবা নদীর বিশাল আকার ধারণ করে।
এর ফলে রাজস্ব আদায়ে অসুবিধা সৃষ্টি
হয়। ১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য দেওয়ানি আদালেতর মিলস নামক একজন জজকে
পাঠানো হয়। ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই জানুয়ারি তারিখে তৎকালীন ভারত সরকারের আদেশ
অনুযায়ী দাওকোবা নদী বগুড়া জেলার পূর্বসীমা নির্ধারিত হয়। ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে
বাউন্ডারি কমিশনারের নির্দেশানুসারে বগুড়া জেলার
দক্ষিণ সীমানার কিছু অংশ রাজশাহী জেলার অন্তর্গত হয়। এই সময় ক্ষাদ্র ভাদাই বা
ভাদ্রাবতী নদীকে বগুড়ার সীমানা নির্ধারিত। এই বৎসরের ১২ই আগষ্ট বগুড়ার গোবিন্দগঞ্জ
থানাকে রংপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই সময় ১০২টি গ্রামকে গোবিন্দগঞ্জ থানার
অধীনে নেওয়া হয় এবং এই থানার ৯টি গ্রামকে বগুড়া থানায় রাখা হয়।
এছাড়া ৪৭টি গ্রামকে শিবগঞ্জ থানার
অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই মার্চে লালবাজার থানাকে পাঁচবিবিতে
স্থানান্তর করা হয়। ২০শে মার্চ মানাস নদী মজে যাওয়ায় কারণে নৌখিলা থানাকে
সারিয়াকান্দির সাথে যুক্ত করা হয়। এরপর ৮ অক্টোবরে, বগুড়া জেলার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের রায়গঞ্জথানাকে পাবনা জেলার সীমা হিসেবে
চিহ্নিত করা হয়। এক্ষেত্রে মধ্যবর্তী সীমানা হিসেবে ইছামিত নদীকে রাখা হয়।
১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই সেপ্টেম্বরে
৪৩৯টি গ্রাম ময়মনিসংহ জেলা থেকে নিয়ে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি থানার সাথে যুক্ত
করা হয়। এই বৎসর শিবগঞ্জথানা বগুড়া থানার আউট পোষ্টে পরিগণিত হয়। ১৮টি নতুন গ্রাম
যুক্ত হওয়ায় শিবগঞ্জথানাকে পূর্ণাঙ্গ থানায় পরিণত করা হয়। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়া জেলার একজন ম্যাজিস্ট্রেট এবং একজন কালেক্টরের শাসনাধীনে আনা হয়। এই
নিয়োগের ফলে বগুড়া একটি পূর্ণাঙ্গ জেলায় পরিণত হয়।
বগুড়া জেলার ভৌগোলিক অবস্থান
৮৮.৫০ ডিগ্রী পূর্ব থেকে ৮৮.৯৫
ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এবং ২৪.৩২ ডিগ্রী উত্তর থেকে ২৫.০৭ ডিগ্রী উত্তর
অক্ষাংশে বগুড়া সদর উপজেলা অবস্থিত। বগুড়া জেলার
উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলা, দক্ষিণে সিরাজগঞ্জ ও
নাটোর জেলা, পূর্বে জামালপুর জেলা ও যমুনা নদী এবং
পশ্চিমে নওগাঁ জেলা অবস্থিত ।
|
আয়তন |
|
|
• মোট |
২,৮৯৮.২৫ বর্গকিমি (১,১১৯.০২ বর্গমাইল) |
বগুড়া জেলার উপজেলাসমূহ
বগুড়া জেলা ১৮২১ সালে জেলা হিসাবে
প্রতিষ্ঠিত হয়। জেলায় উপজেলার সংখ্যা মোট ১২ টি। পৌর সভার সংখ্যা ১২ টি, ইউনিয়ন রয়েছে
মোট ১০৮ টি। এছাড়া জেলায় ২,৬৯৫ টি গ্রাম, ১,৭৫৯ টি মৌজা রয়েছে। বগুড়া জেলার উপজেলা গুলি হল –
• শাজাহানপুর উপজেলা
• আদমদিঘী উপজেলা
• বগুড়া সদর উপজেলা
• ধুনট উপজেলা
• দুপচাঁচিয়া উপজেলা
• গাবতলী উপজেলা
• কাহালু উপজেলা
• নন্দীগ্রাম উপজেলা
• সারিয়াকান্দি উপজেলা
• শেরপুর উপজেলা
• শিবগঞ্জ উপজেলা, বগুড়া
• সোনাতলা উপজেলা
বগুড়া জেলার নদ-নদীসমূহ
করতোয়া,বাঙ্গালী,যমুনা,নাগর,হলহলিয়া,ইছামতি,মহিষাবান,সুখদহ,ডাকুরিয়া,বেলাই,ভাদাই/ভদ্রাবতী,চন্দ্রবতী,গাংনই,গজারিয়া,মানস/মোনাস,বানিয়াইয়ান,ইরামতি,ভেলকা
বগুড়া জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ
১। মানকালীর কুন্ড ধাপ
২। বিহার ধাপ
৩। পরশুরামের প্রাসাদ
৪। বেহুলা লক্ষিণদ্বরের বাসর ঘর (গোকুল মেধ)
৫। খেরুয়া মসজিদ
৬। ভীমের জাঙ্গাল
৭। যোগীর ভবন
৮। ভাসু বিহার
৯। মহাস্থানগড়
১০। পাঁচপীর মাজার কাহালু
১১। সারিয়াকান্দির পানি বন্দর
১২। বাবুর পুকুরের গণকবর, শাজাহানপুর
১৩। জয়পীরের মাজার,দুপচাচিয়া
১৪। সান্তাহার সাইলো
১৫। দেওতা খানকাহ্ মাজার শরীফ,নন্দীগ্রাম
১৬। হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী মাহীসওয়ার (রহঃ) মাজার শরীফ
১৭। শীলাদেবীর ঘাট
১৮। জিউৎকুন্ড
১৯। মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
২০। গবিন্দ ভিটা
২১। ধাপেরহাট দুপচাঁচিয়া
·
মহাস্থানগড়
·
ভাসু বিহার
·
রাজা পরশুরামের বাড়ি
·
জীয়ত কুণ্ড
·
শাহ সুলতান বলখি (রহ.) এর মাজার
·
যোগীর ভবণ
·
বিহার
·
ভীমের জাঙ্গাল
·
নবাব বাড়ী (সাবেক
নীল কুঠির)
·
বিজয়াঙ্গন যাদুঘর, বগুড়া সেনানিবাস, শাজাহানপুর (মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক)
·
শহীদ চান্দু ক্রিকেট স্টেডিয়ামপল্লী উন্নয়ন একাডেমী
·
বাংলাদেশ মশলা গবেষণা কেন্দ্র, শিবগঞ্জ
·
মম-ইন (Momo Inn), ঠেঙ্গামারা, বগুড়া সদর
·
হোটেল নাজ গার্ডেন, ছিলিমপুর, বগুড়া
সদর
·
পর্যটন মোটেল, বনানী, বগুড়া
সদর
·
হোটেল সিয়েস্টা (Hotel Siyesta), বগুড়া সদর
·
ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক, বগুড়া সদর
·
মম-ইন ইকো পার্ক, ঠেঙ্গামারা, বগুড়া
সদর
বগুড়া জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
• জিয়াউর রহমান, বীর
উত্তম (১৯৩৫-১৯৮১) – স্বাধীনতাপত্র পাঠক ও সাবেক
রাষ্ট্রপতি
• প্রফুল্ল চাকী (১৮৮৮-১৯০৮) – ব্রিটিশ
বিরোধী আন্দলনের নেতা
• মোহাম্মদ আলী বগুড়া (মৃত্যুঃ ১৯৬৯) – কূটনীতিক এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
• খাদেমুল বাশার, বীর উত্তম (১৯৩৫-১৯৭৬)
– মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার এবং বিমান বাহিনীর সবেক
প্রধান
• আখতারুজ্জামান ইলিয়াস (১৯৪৩-১৯৯৭) – সাহিত্যিক
ও গল্পকার
• গাজীউল হক (১৯২৯-২০০৯) – ভাষা সৈনিক
• এম. আর. আখতার মুকুল (১৯২৯-২০০৪) – লেখক
এবং সাংবাদিক
• মনোজ দাশগুপ্ত (১৯৪৯-১৯৯৭) – কবি ও লেখক
• মুশফিকুর রহিম – বাংলাদেশ জাতীয়
ক্রিকেট টেস্ট দলের সাবেক অধিনায়ক
• রোমেনা আফাজ – সাহিত্যিক
• শফিউল ইসলাম সুহাস – একজন বাংলাদেশী
ক্রিকেটার
• এনামুল হক – (একুশে পদক ২০১৪, স্বাধীনতা পদক ২০১৭)
• অপু বিশ্বাস – একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী
• ফরিদুর রেজা সাগর – চ্যানেল আই
চেয়ারম্যান।
• তারেক রহমান – বিএনপির ভারপ্রাপ্ত
সভাপতি।
• মাহমুদুর রহমান মান্না – নাগরিক
ঐক্যের আহবায়ক
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, তথ্যবাতায়ন,
পত্রিকা














