***ভূমিবাদী মতবাদের টুরগটের অবদান :
ভূমিবাদী মতবাদে টুরগটের অবদান উল্লেখযােগ্য। নিম্নে তাঁর অবদান আলােচনা করা হলাে
:
১. কৃষি সম্পর্কে বক্তব্য : উৎপাদন ক্ষেত্র। কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়ন
হলে অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রেরও উন্নয়ন ঘটে। এজন্য অর্থনীতির
অন্যান্য ক্ষেত্রের উন্নয়ন
করতে হলে কৃষিক্ষেত্রের সম্প্রসারণ করতে হবে। কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়ন ব্যতীত
অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।
২. মূল্য তত্ত্বের ব্যাখ্যা :
মূল্যত্ত্ব সম্পর্কে টুরগট গুরুত্বপূর্ণ ধারণা প্রদান করেন। তাঁর মতে, প্রত্যেক দ্রব্যের মূল্য নির্ভর করে এ দ্রব্যের উৎপাদন খরচের
উপর। তবে প্রতিযােগিতার কারণে দ্রব্যের মূল্য হ্রাস বৃদ্ধি হতে পারে। তবে তিনি এ ধারণাও প্রদান করেন যে, দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ শুধু উৎপাদন
খরচের উপর নির্ভর করে না,
বরং দ্রব্যের
স্বল্পতা, উপকারিতা এবং প্রাচুর্যের উপরও
নির্ভরশীল।
৩. সুদ তত্ত্ব সম্পর্কে বিশ্লেষণ :
ভূমিবাদী, চিন্তাবিদ, টুরগটের মতে, বাজারের চাহিদা ও যােগানের উপর ভিত্তি
করে সুদের হার নির্ধারিত হওয়া উচিত। তাঁর
মতে, সুদের হার ও খাজনা স্বাভাবিক নিয়মে
সমান হয়। সুদ যদি দেওয়া না হয় তবে ঋণদানকারীগণ বাজার থেকে ঋণের টাকা তুলে নেবে। ঋণের টাকার অভাবে
উৎপােদনকারীদের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৪. শ্রেণি বিশেষের সুবিধা বন্ধ : টুরগট
সমাজের শ্রেণি বিশেষের সুযােগ-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করেন। তিনি একচেটিয়া ব্যবসায়ের পক্ষে ছিলেন
না। কেননা এতে শুধু একটি শ্রেণির লােক বেশি লাভবান হয়। তবে তিনি বৃহৎ শিল্পের ক্ষেত্রে একচেটিয়া ব্যবসাকে
সমর্থন করেন।
৫. উৎপাদন ব্যয় সম্পর্কে ধারণা :
উৎপাদন ব্যয় সম্পর্কে ভূমিবাদী চিন্তাবিদ টুরগট গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব প্রদান করেন। তাঁর মতে, প্রত্যেক দ্রব্যের মূল্য উৎপাদন
ব্যয়ের সমান হওয়া উচিত। কিন্তু বিনিময় মূল্য সম্পর্কে তিনি তেমন কোনাে ভূমিকা রাখেননি। তিনি উৎপাদন ব্যয়ের
ক্ষত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
৬. বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়ােগ : ভূমিকবাদী
চিন্তাবিদ টুরগট শুধু মতবাদ প্রদানই করেননি। তা বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়ােগেও সচেষ্ট হন। তিনি মানুষের শ্রম ও ব্যক্তির
স্বাধীনতার কথা স্বাকার করেন। এ কারণে তিনি এ সম্পর্কীয় সকল বাধারােপ করেন।
**অথবা, মুক্ত বা অবাধ ও সংরক্ষিত বাণিজ্যের মধ্যে আলােচনা কর।
উত্তর : আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্র
অবাধ বাণিজ্য ও সংরক্ষণ বাণিজ্য ধারণা দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উভয় নীতিই
আন্তজাতিক বাণিজ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। নিম্নে অবাধ বাণিজ্য ও সংরক্ষণ
বাণিজ্যের মধ্যে পার্থক্যসমূহ
তুলে ধরা হলাে-
|
পার্থক্যের বিষয় |
অবাধ বাণিজ্য |
সংরক্ষণ বাণিজ্য |
|
১. সংজ্ঞাগত : |
বিদেশের সহিত কোন দেশের যে বাণিজ্য
চলে তার উপর কোন প্রকার বাধা নিষেধ আরােপকরা না হলে তাকে অভাধ বাণিজ্য বলে। |
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিধি
নিষেধ আরােপ করা হলে তাকে সংরক্ষণ বাণিজ্য
বলে। |
|
২. আন্তর্জাতিক বাজার প্রসার : |
অবাধ বাণিজ্যের ফলে দ্রব্যের
আন্তর্জাতিকবাজার প্রসারিত হয়। |
সংরক্ষণ বাণিজ্যে আন্তর্জাতিক বাজার
প্রসার লাভ করতে পারে না। |
|
৩. বিশেষীকরণ : |
অবাধ বাণিজ্যের ফলে আন্তর্জাতিক ভিত্তিতে
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রম বিভাগ ও উৎপাদনে বিশেষীকরণ সম্ভব পর। |
সংরক্ষণ বাণিজ্য আন্তর্জাতিক
ভিত্তিতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রম বিভাগ ও উৎপাদনে বিশেষীকরণ সম্ভবপর হয় না। |
|
৪. দ্রব্য সামগ্রির দাম ও উৎপাদন ব্যয় : |
অবাধ বাণিজ্যের ফলে উৎপাদন খরচ কম হয়। ফলে ক্রেতাগণ কম দামে দ্রব্য সামগ্রি ক্ৰয় করতে পারে। |
সংক্ষরণ বাণিজ্যে বিভিন্ন শুল্ক
আরােপ করার ফলে উৎপাদন খরচ বেশি হয়। ফলে
দ্রব্যের দাম বেশি হয়। |
|
৫. বিশ্ব শান্তি : |
অবাধ বাণিজ্যের ফলে আন্তর্জাতিক শান্তিতে
সহযােগিতা বৃদ্ধি পায়। |
সংরক্ষণ বাণিজ্যে বিশ্ব শান্তিতে
তেমন অবদান রাখতে পারে না। |
|
৬. একচেটিয়া বাজার : |
অবাধ বাণিজ্যে কোন শিল্প একচেটিয়া
ক্ষমতা ভােগ করতে পারে না। |
সংরক্ষণ বাণিজ্যে কোন শিল্প
প্রতিষ্ঠান একচেটিয়া ক্ষমতা ভােগ করতে পারে। |
|
৭. বিভিন্ন দেশের দ্রব্য ভােগ : |
অবাধ বাণিজ্যে ক্রেতারা বিভিন্ন
দেশের দ্রব্য অবাধে ভােগ করতে পারে। |
সংরক্ষণ বাণিজ্যে ক্রেতারা বিভিন্ন
দেশের দ্রব্য অবাধে ভােগ করতে পারে না। |
|
৮, হাতিয়ার : |
অবাধ বাণিজ্যে বাধা নিষেধ এর
কোনহাতিয়ার নেই। |
সংরক্ষণ বাণিজ্যের হাতিয়ার হলাে
বিভিন্ন বিধি নিষেধ, কোটা, শুল্ক
ইত্যাদি। |












