শালিস কাকে বলে


** শালিস কাকে বলে?

উত্তরা ভূমিকা : বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যগত বিচার প্রথা হচ্ছে শালিস।

শালিস : শালিস গ্রামের পুরাতন প্রথাজাত প্রতিষ্ঠান। শালিস শব্দের উৎপত্তি আরবি শব্দ ছালাছা' থেকে যার অর্থ তিন বা তৃতীয় জন। এটি প্রতিকী অর্থে মধ্যস্থিতাকারী হিসেবে বুঝায়। শালিসের ইংরেজি প্রতিশব্দ Arbitration অর্থাৎ মধ্যস্থতার দ্বারা নিস্পত্তি। শালিস গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামাে থেকে উৎপন্ন একটি বিচারিক ব্যবস্থা। সাধারণভাবে বলা যায় যে, গ্রামীণ দ্বন্দ্, সংঘাত, বিরােধ, মনােমােলিন্য ইত্যাদি যাবতীয় অসযােগিতা, বিবাদ বিসম্বাদমীমাংসা ও নিরসনের উপায়ই হলাে শালিস। বিশেষভাবে বলা যায় যে কোনাে ব্যাপার বা বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে (যেটা

ব্যক্তিগত, বংশগত, স্বার্থগত, শ্রেণিগত) বিরােধ বা মতপার্থকের সৃষ্টি হলে কিংবা সামাজিক অপরাধ, সংঘাত, সংঘর্ষ দেখা দিলে যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মীমাংসা বা সমাধান করা হয় তাকেই শালিস বলা হয়।

জাহাঙ্গীর (Jahangir) এর মতে, "সামাজের মধ্যে সংগঠিত বিবাদ। বিষেদাগার সংঘাত, দ্বন্দ কিংবা সামাজিক অপরাধসমূহের সমাধানের সামাজিক আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমকেই শালিস বলে।"

আ্রামীণ সমাজে ন্যায়বিচার, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় শালিসের গুরুত্ব অপরিসীম। তাবে গ্রামীণ ক্ষমতা স্বার্থা্বেধী মহল শালিস প্রক্রিয়ায় অবৈধ প্রভাব বিস্তারে সদা সচেষ্ট। এদের অপতৎপরতার কারণে শালিস বিচার প্রথা অনেক সময় নযায়াবিচার নিশ্চিত করতে পারে না। গ্রামীণ শান্তি শৃঙ্খলায়ও এ বিষয়টি বিরূপ প্রভাব ফেলে। শালিসের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে দেওয়ানি বা ফৌজদারি উভয় ধরনের ছােটখাটো বিবাদ বিরােধ আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার করা যায়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজের মধ্যে সংগঠিত সামাজিক অপরাধ, সবন সংঘাতসমূহের সামল আনানুষ্ঠানিক শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপায়ই হলাে শালিস।




সামাজিক পরিবর্তন 

সমাজের বিভন্ন অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠান যেমন- অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক,

শিক্ষাগত, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ইত্যাদির মধ্যে রদবদল, সমাজস্থ মানুষের সামাজিক সম্পর্ক তথা সমাজ কাঠামাের মধ্যকার সার্বিক রদবদল বা পরিবর্তনই সমাজ পরিবর্তন।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন তাত্ত্বিক সমাজবিজ্ঞানী সামাজিক পরিবর্তনের বিবিধ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। এসব সংগ্ঞা নিয়নে উল্লেখ করা হলাে :

বিখ্যাত তাত্ত্বিক Kingsley Davis তার Haman Society গ্রন্থ বলেছেন, "সামাজিক পরিবর্তন বলতে সামাজিক সংগঠনের মধ্যে সংঘটিত রূপান্তরকে বুঝায়। আসলে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজের কাঠামাে ও ক্রিয়ার ক্ষেত্রে রূপান্তরকেই মূলত সামাজিক পরিবর্তন বলা হয়।"

সমাজবিজ্ঞানী স্যামুয়েল কোয়েনিগ-এর মতে, মানুষ সৃষ্ট যে কোনাে সামাজিক উন্নয়নের নাম হচ্ছ সামাজিক পরিবর্তন। সমাজবিজ্ঞানী উইলিয়াম এফ. অগবার্ন (William F Ogburm) এর মতে, "সমাজে বসবাসকারী জনগণের কৃষ্ি ও সংস্কৃতিয় পরিবর্তনই সামাজিক পরিবর্তন। কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সংগঠিত হয় পরিবার কৃষিক্ষেত্রে, দর্শন, শিল্প, কলা বিজ্ঞানের সমন্বয়ে

সংজ্ঞানগুলাের আলােকে বলা যায় যে, সামাজিক পরিবর্তন হলাে সমাজের এমন এক ধরনের পরিবর্তন যা সমাযে বলবাসকারী মানুষের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, দর্শন, শিল্পকলা মূল্যবােধ, রীতিনীতি, বিশ্বাস, প্রভৃতির পরিবর্তন নির্দেশ করে

 

Share:

No comments:

Post a Comment

slidebar

Total Pageviews

Abdullah Mondal

Powered by Blogger.

Blog Archive

Recent Posts

বাস্তবতা

জীবনের বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর। এটাই জীবন। জীবনের বাস্তবতার বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যতই নিষ্ঠুর হউক বা যতই কষ্ট হউক তা সয়ে নিতে হয়, মেনে নিতে হয় জীবনের প্রয়োজনেই। জীবনে কষ্ট আসলে মানসিক ভাকে যতটুকু ভেঙ্গে পড়বে জীবন তার দ্বিগুন পিছিয়ে যাবে। জীবনের সকল দূঃখ কষ্ট ও বাস্তবতাকে জীবনের অংশ হিসাবে মেনে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করার নামই হচ্ছে সুখ।

Pages