**পরিকল্পনা/উত্তম পরিকল্পনার
বৈশিষ্ট্যসমূহ : সব ধরনের পরিকল্পনার কতকগুলাে বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেগুলাে পরিকল্পনা
গঠন, বাস্তবায়ন, কার্যক্রম প্রভৃতি বিভিন্ন দিককে
নির্দেশ করে থাকে। ফরাসি প্রশাসক হেনরি ফেয়ল(Henry Fayol) একটি উত্তম পরিকল্পনার আটটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। যথা : ১. উত্তম পরিকল্পনার উদ্দেশ্যসমূহ
সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত এবং সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণিত থাকে।
২. উত্তম পরিকল্পনায় সকল প্রকার
প্রয়াজনীয় কর্মকা্ডের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ লিপিবদ্ধ থাকে।
৩, উত্তম পরিকল্পনাকে সুপরিবর্তনীয় হতে হয় যাতে করে আকস্মিক ও
অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সাথে
খাপখাওয়ানাে সম্ভবপর হয়।
৪. উত্তম পরিকল্পনাকে অনিশ্চিত
বিষয়য়াদির মােকাবিলা করলে আকস্মিক সম্ভাব্য ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
৫. উত্তম পরিকল্পনা বারংবার বা ঘন ঘন
সম্ভাব্যতা পরীক্ষা করে।
, উত্তম পরিকল্পনা এর একনিষ্ঠ সমর্থকদের
কাছে পরিকল্পনার বিষয়াদি সঠিকভাবে পরিব্যাপ্ত করে দেয়।
৭, উত্তম পরিকল্পনা প্রাপ্ত সম্পদের সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করে কী করণীয়
তা স্থির করে।
৮. উত্তম পরিকল্পনা লিখিত আকারে
বিদ্যমান থাকে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত বৈশিষ্ট্যের
আলােকে বলা যায় পরিকল্পনা সবসময়ই নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যভিত্তিক। এটি
বুদ্ধিমন্ত্র ও সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ।
পল্লি উন্নয়নে এনজিও'র কর্মসূচি
১৯৭০ সালে বাংলাদেশে একটি
ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়। এ সময় বিভিন্ন দাতা সংস্থা এদেশে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে। ১৯৭১
সালের মুক্তিযুদ্ধের পর দেশকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা সাহায্য ও সহযােগিতার নামে অনুপ্রবেশ করে।
বর্তমানে বাংলাদেশে দেশি ও বিদেশি এনজিওগুলাে পল্লিউন্নয়নসহ বিভিন্ন রকম কর্মসূচি প্রণয়ন করছে। এদেশে প্রধান NGO'র মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ইউসেপ, কেয়ার, ওয়াল্ড ভিশন বাংলাদেশ, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ইত্যাদি। এসব
এনজিও এদেশের পল্লি উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করছে, যা নিম্নরূপ :
ক. কৃষি উন্নয়নে NGO যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা হলাে কৃষিঋণ
সরবরাহ, প্রশিক্ষণ প্রদান, বীজ ও সারের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা প্রদান, বীজ ও সার বিতরণ, কৃষি গবেষণা ইত্যাদি।
খ. শিক্ষাক্ষেত্রে NGO-সমূহ আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক উভয়
ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। যেমন- বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বয়স্ক শিক্ষা, ছাত্র
বৃত্তি প্রদান।
গ. স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা
ক্ষেত্রে টীকাদান, ধাত্রী প্রশিক্ষণ, পুষ্টিজ্ঞান, চক্ষুশিবির ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ
করে।
ঘ, দারিদ্র্ বিমােচনে NGO-সমূহের
সাধারণ ভূমিকা হচ্ছে ঋণ সুবিধা প্রদান, পতিত জমি বণ্টন, উচ্চতর
মজুরির জন্য দরকষাকষি ইত্যাদি।
৬. NGO-সমূহ নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন- নারীনির্যাতন
প্রতিরােধ, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর ভূমিকা এবং
নারী-পুরুষের সমতা বিধান।
চ. NGO-সমূহ গৃহায়ন,
বনায়ন ও পরিবেশ
উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ছ, NGO-সমূহ স্যানিটেশন কর্মসূচি হিসেবে গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা বিতরণসহ বিশুদ্ধ পানির ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি
করে।
জ. ব্র্যাক, প্রশিকা, গ্রামীণ ব্যাংকের ন্যায় বেশকিছু NGO ক্ষুদ্র ব্যবসায়, কৃষিকাজ, হাঁস-মুরগির খামার, ক্ষুদ্র শিল্প, রেশম চাষ, সবজি বাঁগান, মৎস্য চাষ প্রভৃতি কর্মসূচির জন্য
ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে।








No comments:
Post a Comment