স্থানীয় সরকার কাঠামোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

 

**স্থানীয় সরকার কাঠামোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : সময়ের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার কাঠামােতে বিবিধরূপ পরিবর্তন সাধিত হয়। স্থানীয় সরকার কাঠামাে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে সময়ের আবর্তে তার গুরুত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় সরকার কাঠামাে পর্যালােচনা কমিশন, ১৯৯১ (স্থানীয় সরকার উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন পুনর্গঠন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ১৯৯১) বাংলাদেশে প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার কাঠামাের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের উপর

আলােকপাত করেছে। এ প্রস্তাবনার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নরূপ ;

১. প্রশাসন ও উন্নয়নে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

২. প্রত্যক্ষ ভােটের মাধ্যমে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ।

, স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা

৪. স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার ব্যবস্থা করা।

৫. উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট এলাকা হতে সম্পদ আহরণ করা।

৬. স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে জনগণের নিকট জবাবদিহি রাখার ব্যবস্থা করা।

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে এককভাবে দেশের যাবতীয় কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। তাই সরকারের কার্যাবলি সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য দেশের সমগ্র ভূ-ভাগকে বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক ভাগ করা হয়। এতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের ভারও কমানাে সম্ভব।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্থানীয় সরকার কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ রে। স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব আছে, কিন্ত নীতিনির্ধারণের স্বাধীনতা নেই।

 



মৌলিক পণতন্ত্র ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য 

: পাকিস্তান আমলে স্থানীয় শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনয়ন করেন পাকিস্তানের সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান। ১৯৫৯ সালের ৭ অক্টোবর আইয়ুব খান (রাষ্ট্রপতি আদেশ নং ১৮) 'Basic Democracies' Order' ঘােষণা করেন। তিনি এই আদেশে চার স্তর বিশিষ্ট স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকার প্রবর্তন করেন। এই চারটি স্তর হলো :

ক. ইউনিয়ন কাউন্সিল খ. থানা কাউন্সিল গ, জেলা কাউন্সিল ঘ. বিভাগীয় কাউন্সিল।

এই ব্যবস্থায় ইউনিয়ন কাউন্সিলের উপরই বেশি জোর দেয়া হয়েছিল। ইউনিয়ন কাউন্সিলে ১০-১৫ জন সদস্য ছিল যারা সরাসরি জনগণের ভােটে নির্বাচিত হতাে। এ আদেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন কাউন্সিলের সদস্যগণ নির্বাচকমণ্ডলীতে পরিণত হয়। এ নির্বাচকমণ্ডলী প্রেসিডেন্ট, কেন্দ্রীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন করতেন। মৌলিক গণতন্ত্রে এক অভিনব ব্যবস্থা ছিল। এই ব্যবস্থায় পাকিস্তানের দুটি প্রদেশে ৪০,০০০ হাজার করে মােট ৮০,০০০ নির্বাচনি একক (Electoral Unit) সৃষ্টি করা হয়। প্রতিটি নির্বাচনি এলাকার ভােটারগণ তাদের মধ্যে থেকে একজনকে ভােট দিয়ে নির্বাচন করতেন। নির্বাচিত সদস্যই ঐ এককের নির্বাচক হতেন। সমগ্র দেশের নির্বাচকগণ মিলিতভাবে নির্বাচকমণ্ডলীতে পরিণরত হতেন। ভৌগলিক সংলগ্নতা, জনসংখ্যা, যাতায়াতের সুবিধা ইত্যাদি বিবেচনা করে নির্বাচনি একক গঠন করা হতাে। একক গঠনের পর ভােটার তালিকা তৈরি করা হতাে। এলাকায় বসবাসকারী ২১ বছর বয়স্ক ব্যক্তির ভােটাধিকার ছিল। মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় শহরগুলাে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। শহরের জনসংখ্যা ১৫ হাজার বা তার কম হলে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাটির নাম হতাে টাউন কমিটি। আর যে সকল শহরে জনসংখ্যা ১৫ হাজার বা তার বেশি হতাে সেসব শহরে প্রতিষ্ঠিত হতাে পৌর কমিটি বা মিউনিসিপ্যাল কমিটি।

Share:

No comments:

Post a Comment

slidebar

Total Pageviews

Abdullah Mondal

Powered by Blogger.

Blog Archive

Recent Posts

বাস্তবতা

জীবনের বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর। এটাই জীবন। জীবনের বাস্তবতার বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যতই নিষ্ঠুর হউক বা যতই কষ্ট হউক তা সয়ে নিতে হয়, মেনে নিতে হয় জীবনের প্রয়োজনেই। জীবনে কষ্ট আসলে মানসিক ভাকে যতটুকু ভেঙ্গে পড়বে জীবন তার দ্বিগুন পিছিয়ে যাবে। জীবনের সকল দূঃখ কষ্ট ও বাস্তবতাকে জীবনের অংশ হিসাবে মেনে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করার নামই হচ্ছে সুখ।

Pages