**
অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে লিওন
ওয়ালরাসের অবদান বর্ণনা কর।
অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে লিওন
ওয়ালরাসের অবদান : নিম্নে অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে লিওন ওয়ালরাসের অবদান আলোেচনা করা হলাে :
১. সামগ্রিক ভারসাম্য বিশ্লেষণ :
অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গা বিশ্লেষণের জন্য সামগ্রিক ভারসাম্যের অবতারণা।
লিওনর ওয়ালরাস তার 'Elements of Pure Economics' বইতে সাধারণ ভারসাম্যের গুরুত্বপূর্ণ
ব্যাখ্যা প্রদান করেন। অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অসংখ্য দ্রব্য ও উপকরণের সমন্টি, চাহিদা ও যােগানের সমতাসাপেক্ষে
সামগ্রিক আয় ও ব্যয়ের সমতা বিধানের বিষয় যে পদ্ধতির অধীনে করা হয় তাকে সামগ্রিক
ভারসাম্য বিশ্লেষণ বলে।
২. মূলধন তত্ত্ব : তিনি মােট আয় থেকে মূলধনের ক্ষয়ক্ষতিজনিত ব্যয় এবং সম্ভা
ব্য ক্ষতির বিপরীতে বিমাজনিত ব্যয় বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেন, যাতে নিট আয় পরিমাপ করা যায়। এভাবে লিওনওয়ালরাস অর্থনীতিতে মূলধন তত্ত্ব
ব্যাখ্যা করেন।
৩, উদ্যোক্তা: উদ্যোক্তা যেমন উৎপাদন কাজে অংশগ্রহণ
করে তেমনি বনণ্টনের কাজেও অংশগ্রহণ করে। সুতরাং এক্ষত্রে উদ্যোক্তার ভূমিকা অধিক। আবার
উদ্যোস্তা কর্তৃক দ্রব্য উৎপাদন ও বন্টনের মূল উদ্দেশ্য হলাে উপযােগকে বৃদ্থি করা। অতএব কোনাে দ্রব্যের উপযােগ বৃদ্ধির
ক্ষেত্রে উদ্যোক্তার ভূমিকা সর্বাধিক।
৪. সামাজিক সম্পদ : লিওন ওয়ালরাস
সামাজিক সম্পদ বলতে বস্তুগত এবং অবস্তুগত দ্রব্য বিবেচনা করেন, যাদের উপযােগ আছ। এসব দ্রব্যের যােগান আবার
চাহিদার তুলনায় আপেক্ষিকভাবে কম। তবে সবকিছুর বিনিময় মূল্য এদের উপযােগের অনুপাতের সমান হবে। অর্থাৎ প্রান্তিক এককের ক্ষেত্রে
এদেরপ্রান্তিক উপযােগ সমান হলে দামও সমান হবে।
৫. মূল্যনির্ধারণ তত্ত্ব: দ্রব্যের চাহিদা ও যােগান
দ্রব্যমূল্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু ওয়ালরাস মূল্যনির্ধারণ প্রক্রিয়া
আলােচনায় উৎপাদন খরচের ওপর তেমন গুরুত্ব প্রদান করেননি; বরং উপযােগগত মূল্যের ওপর তিনি অধিক
গুরুত্ব প্রদান করেন। দ্রব্যমূল্য যাহােক না কেন, ভােক্তা এমনভাবে দ্রব্য ক্রুয় করে
যাতে, প্রান্তিক উপযােগ ও দ্রব্যের বিনিময়
মূল্যের অনুপাত সমান হয়
***বাজার বলতে জে.বি. সের কি বুঝিয়েছেন?
জে বি সের বাজার বিধি : জেন ব্যাপটিস্ট
সে'র ধাণাটি মূলত মৃক্ত বাজার অর্থনীতি
কেন্দ্রিক। তারমতে দীর্ঘমেয়াদে বাজারে কোনাে দ্রব্য অবিক্রিত থাকে না। জোগান থাকবে ঠিক ততটুকুই
চাহিদা থাকবে। তার মতের কার্যকরী চাহিদার কোনাে ঘাটতি থাকে না। কারণ দীর্ঘকালে মুক্ত
বাজার অর্থনীতিতে উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণের অজিত আয়ই চাহিদার মূল উৎস।
সের বিধির মূল বক্তব্য : "যােগান
নিজেই তার চাহিদা সৃষ্টি করে"। সে' বিশ্বাস করতেন যে, কোনাে প্রকার সরকারি হস্তক্ষেপ না থাকলে
দীর্ঘমেয়াদে কোনাে অর্থনীতিতে সামগ্রিক চাহিদা, সামগ্রিক যােগান এর সমান হবে। অর্থনীতিতে পূর্ণ নিয়ােগ অবস্থা
বিদ্যমান থাকলেই এ অবস্থার
সমতার বিষয়টি বাজার প্রক্রিয়ার সাথে
সম্পর্কিত। এজন্য এই বিধিটিকে 'সে'র বাজার বিধি বলা হয়।
*অনুমিত শর্ত : সে'র বাজার বিধি বিশ্লেষণ করতে নিম্নোক্ত
অনুমিত শর্ত দরকার হয়।
১. মুক্তবাজার অর্থনীতি বিদ্যমান এবং
অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে কোনাে সরকারি বাধা নেই;
২. প্রযুক্তিগত ক্রিয়াকলাপ স্থির;
৩. সঞ্চয় ও বিনিয়াোগ সমতার ক্ষেত্রে
নমনীয় সুদের হার বিবেচ্য;
৪. গতিশীল অর্থনীতি বিদ্যমান;
৫. বিস্তৃত দ্রব্য ও সেবার বাজার; ও
৬. প্রকৃত নগদ ব্যালেন্স স্থির।
**অর্থনীতির জনক হিসেবে এ্যাডাম শ্মিথ।
১. মূল্যতত্ত্ব তিনি মূল্যত্ত্ব
সম্পর্কে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন, শ্রমিক কর্তৃক উৎপাদি প্রব্যই হলাে শ্রনিকের প্রাপ্য। আবার শ্রমিকরা সেই পরিমাণ
উৎপাদন করে যা জমির খাজনা ও মুনাফা আকারে জমিদাররা কেট নেয়। তিনি আরও বলেন, আসল উৎপাদন তৈরির উৎস হলাে প্রকৃতি। শ্রমিকরা
শক্তি ও কৌশল ্রয়ােগ করে পাকৃতিক সম্পদের সাহায্যে নতুন দ্রব্য উৎপাদান করে।
আতএব বলা যায়, শ্রমিকরাই শুধু অতিরিক্ত মূল্য উৎপাদন
করে।
২, উৎপাদক ও অনুৎপাদক শ্রম: তিনি
উনুৎপাদক
শ্রম বলতে সরকারি কর্মচারিদের শ্রম, গৃহভুত্যদের শ্রম প্রভৃতিকে বুঝিয়েছেন।শুধু তা নয় ধর্মাজক, শিক্ষক ডাক্তার, উকিল, গায়ক এ রকম সকল শ্রেণির শ্রমকে
অনুৎপাদক শ্রম বলেছেন। অর্থাৎ যে সকল শ্রম দ্বারা নতুন জিনিস তৈরি হয় না ঐ সকল শ্রমই অনুৎপাদনশীল
শ্রম।
৩. শ্রমিকের মজুরি : মজুরি নির্ধারিত হয় যা শ্রমিক এবং জমিদারদের
মধ্য চুক্তির
ভিত্তিতে স্থির হয়। এ কারণে সাধারণ মজুরি কি পরিমাণ
হবে তা নির্ভর করে চুক্তির উপর।
৪. মুনাফা নির্ধারণ : কোন দেশে সস্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পায়। কারণ সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে অধিক লোক সম্পদকে
উৎপাদন কাজে
নিয়ােজিত করে। ফলে মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পায়।
৫. জনসংখ্যা বৃদ্ধি: তার মতে, কোনাে দেশে যদি সম্পদ বৃদ্ধি পায় এবং
মজুরি বৃদ্ধি পায় তাহলে এ ক্ষেত্রে
জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবেই। এরপ জনসংখ্যা বৃদ্ধি দেশের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৬. একচেটিয়া ব্যবসা : উৎপাদক দ্রব্যমূল্য ইচ্ছা অনুসারে
নির্ধারণ করে আবার একচেটিয়া কারবারি কর্তৃক উৎপাদিত যতই বেশি হয়
ততই তাদের
মুনাফা অধিক হয়। তবে, তিনি
একচেটিয়া ব্যবসায় সমর্থন করেননি।
৭. জমির উর্বরতার তারতাম্য : এডাম স্মিথের মতে, খাজনা তখনই একজন জমির মালিক
পেতে পারে যখন জমিদার জমির উন্নতি সাধন করে। কিন্তু বাস্তবে জমিদার উন্নতি সাধন না
করে খাজনা আদায় করে। অর্থাৎ জমির উর্বরতার
এবং
অবস্থানগত পাথকোর কারণে খাজনার তারতমা খটতে পারে।
৮, বাক্তিস্বাতন্ত্রাবাদ: এ্যাডাম শ্মিথ তাঁর লেখনিতে ব্যক্তিগত
উদ্যোগর সুবিধা ব্যাখা করেন
। অর্থাৎ
স্মিথ অর্থনৈতিক
কর্মকাণডে ব্যক্তি স্বাধীনতা সমর্থন এবং অহেতুক রষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের বিরোধিতা
করেন তার মতে সম্পদের বন্টন এবং দ্রব্য মূল্য নির্ধারণ অদৃশ্য হন্ত বা বাজার প্র্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠভাবে সম্পাদন
করা সম্ভবপর
হতে পারে এজন্য তিনি কর ব্যবস্থাপনার উপর
গুরুত্ব আরােপ করেন।
৯.
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য : এ্যাডাম স্মিথ বাণিজ্যতন্ত্রীদের সংরক্ষণবাদের বিরােধিতা
করে মুক্ত বাণিজ্যের সপক্ষে জোরালাে মত প্রকাশ করেন। মুক্ত বাণিজ্য
সম্পর্কে মত প্রকাশ করতে গিয়ে এডাম স্মিথ চরম ব্যায় সুবিধা তত্ব প্রদান করেন। এ তত্ত্বের মূল কথা হলো যে দেশ
যে দ্রব্য অন্য দেশের তুলনায় কম খরচে উৎপাদন করতে পারবে সে দেশ সেই
দ্রব্য
রপতানি করবে। আবার যে দ্রব্যের উৎপাদন খরচ বেশি সেই দ্রব্য আমদানি করবে। ফলে দেশের
কল্যাণ বৃদ্ধি পাবে ।
** ইসলামি অর্থনীতির সংজ্ঞা দাও।
ইসলামি অর্থনীতি : দোলনা থেকে কবর
পর্যন্ত এ ব্যবস্থার আলােকে একজন মুসলিমকে জীবন-যাপন করতে হয়। ইসলামে রয়েছে সুষ্ঠু সমাজ, রাষ্ট্র ও অর্থব্যবস্থা এবং রয়েছে
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা। মানব চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন, ন্যায় নীতি ও সুবিচারভিত্তিক
শান্তি-শৃঙ্খলাপূর্ণ গতিশীল সমাজ গঠন ও সংরক্ষণে ইসলামের অর্থনীতি হলাে অর্থনীতির সেই শাখা যে অর্থনীতি আল্লাহ
প্রদত্ত কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা পরিচালিত হয়।ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক পুরস্কার
প্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ খুরশীদ আহমদ এর ভাষায়- "ইসলামি অর্থনীতি হলাে ইসলামি দৃষ্টিকোণ হতে অর্থনৈতিক সমস্যা
ও ঐসব সমস্যার ইসলামি ধারণার প্রক্ষিতে মানবীয় আচরণকে বােঝার এক পদ্ধতিগত প্রয়াস।"








No comments:
Post a Comment