খ্বায়তশাসিত সরকারের সাথে মাঠ
প্রশাসনের দ্বন্দ্ব বর্তমানে দীর্ঘস্থায়িত্বের রূপধারণ করেছে। স্থানীয়
স্বায়ত্তশাসিত
সরকারের সাথে মাঠ প্রশাসনের স্বন্দেবের
বিবিধ কারণ রয়েছে যা নিম্নে আলােচনা করা হলাে :
১. দলীয়করণ : তৃণমূল পর্যন্ত নিজ দলের
প্রভাব ধরে রাখার উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীন দলসমূহ দলের প্রতি অনুগত ব্যক্তিদেরই মাঠ প্রশাসনে নিয়ােগ দিয়ে থাকে। জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত
ব্যক্তিরা স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত
সরকারের প্রতিটি স্তরে দায়িত্ব পালন করেন। এমতাবস্থায় সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে প্রায়শই
দ্বন্দ্ সৃষ্টি হয়।
২. দুনীতি : স্বজনপ্রীতি ও দলীয়
প্রভাবের কারণে স্থানীয় সরকারের ব্যক্তিবর্গ অনেক সময়ই দুর্নীতিমুক্ত থাকতে পারে
না। মুতরাং প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের
দুর্নীতি মাঠ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে দ্বন্দের সৃষ্টি করে।
৩, প্রশাসনিক দ্বন্দ : স্থানীয়, স্বায়ত্তশাসিত সরকারের প্রতিনিধিরা
মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করতে অক্ষম। কেন্দ্রীয়
নিয়ন্ত্রণ বেশি থাকার কারণে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকারের স্তরগুলাে
স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। বরং কেন্দ্রীয়
সরকারের লেজুড়বৃত্তি করে আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
৪. অর্থসংক্রান্ত ঘন্ : ইউনিয়ন পরিষদ নিজেদের বাজেট প্রণয়ন করতে পারলেও
এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক, ইউএনও, এলজিইডি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের অনুমােদনের পয়ােজন হয়। এমনকি এলাকাডিত্তিক
উন্নয়নের ব্যয় কর্মসূচিতে স্থানীয় সরকারের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের
ক্ষমতা নেই। অর্থাৎ আর্থিক দিকটি মাঠ প্রশাসন
দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং এক্ষেত্রেও দ্বন্দ্ সৃষ্টির অবকাশ থাকে।
৫, অভ্যন্তীণ কোন্দল : জেলা প্রশাসক জেলার সার্বিক দায়িত্বপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা হলেও আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাকে জেলা পুলিশ সুপারের উপর নির্ভর
করতে হয়। ফলে প্রাধান্য নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব প্রতিযােগিতা। গুরুত্ব ও
মর্যাদা দখলের লড়াই নিয়ে মানসিক দ্বন্দ্ব
বিরােধ দেখা দিলে সুষ্ঠু প্রশাসনিক কাঠামাে বিঘ্ন হয়।
৬. আমলাদের কর্তৃতুমূলক মনােভাব : মাঠ
প্রশাসনের সাথে যুক্ত আমলারা সব সময় স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলাের সাথে সহযোগিতাপূর্ণ মনােভাব পােষণ না করে
কর্তৃত্মূলক মনােভাব পােষণ করেন। সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে তাদের
আচরণ স্থানীয় স্তরগুলোতে আমলাতান্ত্রিত মনোভাবই পোষণ করে।
***পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি : স্থানীয় সরকার
অধ্যয়ন পদ্ধতিগুলাের মধ্যে পরিসংখ্যানিক পদ্ধতিও আধুনিক অধ্যয়ন পদ্ধতি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয়
সরকার স্থানীয় জনগণের উপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করে। জনগণের
উপর পরিচালিত তথ্য উপাত্ত থেকে স্থানীয়
সরকার এ পদ্ধতির মাধ্যমে খুব সহজে জীবনযাত্রার মান, সাক্ষরতার হার, দরিদ্রতা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, উৎপাদন, ভাগ, বণ্টন, আমদানি ও রপ্তানি সম্পর্কে জানা যায়। ফলে স্থানীয় সরকার তার প্রয়ােজনমতাে এবং চাহিদা মাফিক
কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন নিবেদন করতে পারে।








No comments:
Post a Comment