**অর্থনৈতিক পরিকল্পনা : অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলতে বুঝানাে হয় এমন ধরনের পরিকল্পনা কৌশল যেখানে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সম্পদ বরাদ্দ দেয়া হয় টাকা বা অর্থের বিবেচনায়। আর্থিক পরিকল্পনায় বাজারের চাহিদা সরবরাহের নীতিকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়। বস্তুগত পরিকল্পনায় সম্পদ বরাদ্দ দেওয়া হয় মানুষ, বস্তু এবং যান্ত্রিক বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে। এখানে সমাজের বক্তগত ভারসাম্যের উপর অধিক গুরুত্বারােপ করা হয়।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সাফল্যের শর্তাবলি : বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। এদেশে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সাফল্যের হার খুব কম হওয়ার উন্নয়নের গতি অত্যন্ত মন্থর।
বাংলাদেশে
অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সাফল্য অর্জন করতে হলে নিচের ব্যবস্থাবলি গ্রহণ করতে হবে ।
১.
পরিকল্পনামুখী উপযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় সাফল্য
পেতে হলে প্রথমেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে
পরিকল্পনামখী আধুনিক, উপযুক্ত
শিক্ষার আলােকে তৈরি করতে হবে। যদিও এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি কাজ তবুও এই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ভবিষ্যতে দক্ষ, উপযুক্ত এবং আধুনিক কর্মী বাহিনীর সৃষ্টি হবে।
২.সঠিক ও তথ্য নির্ভর পরিকল্পনা প্রণয়ন : কথায় বলা হয় সঠিক এবং
উপযুক্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি প্রয়োজনীয় অর্ধেক কাজই শেষ হয়। তবে তথ্য নির্ভর
অ্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হলে তথ্য সংগ্রহের সংগঠনকে বৈজ্ঞামিক কার্যকর রপে
গড়ে তুলতে হবে।
৩.সুস্থওস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ: বাংলাদেশের রাজনীতি
গণতানত্রিক হলেও রাজনৈতিক কার্যকলাপ সু্ষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক নয়। তাই সুস্থ ও স্থিতিশীল
রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৪.অভ্যন্তরীণ সম্পদের যথাযথ অনুসন্ধান : বাংলাদেশ একটি
ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হলেও এদেশে সীমিত আকারে বেশ কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে।
বাংলাদেশের এই অভ্যন্তরীণ সম্পদের যথাযথ অনুসন্ধান জরুরী। কারণ অভ্যন্তরীণ সম্পদ
যে কোনাে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সকলতা পাতে সাহায্য করে।
৫. সম্পদের
কার্যকর ব্যবহার : অর্থনৈতিক পরিকল্পনাকে সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে
বাংলাদেশের প্রাকৃতিকঅথবা অপ্রাকৃতিক উভয় প্রকার সম্পদের সদ্ধ্যবহার করতে হবে।
এজন্য প্রয়ােজন সঠিক জ্ঞান ও দক্ষতা সম্পন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। তবে এখানে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হয় যে, পরিকল্পনা হতে হবে দেশীয় সম্পদের উপর ভিত্তি করে
এবং
বাস্তবসম্মত।
৬. জন ঢাহিদার দাবি পূরণ : সমাজের সকল শ্রেণি, পেশার, বর্ণের মধ্যে যেন অসামঞ্জস্য না থাকে। সমাজের কোনাে অংশ যেন বৈষম্যের
শিকার না হয় ।
৭. অর্থনৈতিক
পরিকল্পনা কমিশন পঠন : পরিকল্পনা প্রণয়নের
ক্ষেত্রে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, দেশের জনগণের
আশা-আকা্ঙ্খাসহ সার্বিক দিক খেয়াল রাখতে হবে ।
৮. যথাযথ ব্যয়:অতিরিক্ত লোক নিয়ােগ, তত্ত্বাবধানে
ক্রুটি বাস্তবায়নের সময়ের দীর্ঘতা, কুশলীব অদক্ষতা
দূনীতি, ঘুষ, লাল ফিতার
দৌরা্ত্ব ইত্যাদি এর কারণে যেন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ব্যর্থ না হয়।
৯.পরিকল্পনা কমিশন ও প্রশাসকের মধ্যে সম্পর্ক : অনেক সময় সুষ্ঠু
যুগযোপযোগী পরিকল্পনা থাকা সত্বেও প্রশাসকের সাথে ভাল সম্পর্ক না থাকার কারণে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা
ব্যর্থ হয়। কারণ পরিকল্পনার কাজের বাস্তবায়ন করে থাকে প্রশাসক ।
১০. দক্ষ জনকল
নিয়োপ : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাকে সফল করতে দক্ষ জনবলের নিয়ােগ দান করতে হবে । কারণ দক্ষ লোকবল ছাড়া
অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মত জটিল বিষয় সবার দ্বারা সম্ভব নাও হতে পারে।








No comments:
Post a Comment