মনোবিজ্ঞান ৬ষ্ঠ পত্র

 

**স্বতঃসিদ্ধ কী: স্বতঃসিদ্ধ হলো কতকগুলো বিবৃতি যেগুলো কোলো

প্রকার প্রমাণ ছাড়াই সত্য বলে ধরা হয়।

**সাধারণভাবে পদকে কী বলা হয়: প্রশ্ন বলা হয়।

**প্রতিক্রিয়া কী: সাধারণত প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কোনো কিছুর প্রতি সাড়া প্রদান।

**উত্তম পদের বৈশিষ্ট্য কয়টি: ৭টি।

**মেট্রোপলিটন এবিভমেন্ট টেস্ট ১৯৩০ সালে আবিষ্কৃত হয়।

**একজন ব্যক্তির মনােভাব তিনটি উপাদানে গঠিত হয়। যথা : ১. জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা; ২. অনুভূতি; ও ৩. কর্মপ্রবণতা।

**দ্বি-মোড সমস্য: কোনাে নিবেশনের তথ্যমানগুলোে যখন দুই বা ততােধিক মানের দিকে সমপ্রাধান্য রেখে কেন্দ্রীভূত হয় তখন নিবেশনে দুটি বা তার চেয়ে অধিক মােড পাওয়া যায় যা দ্বি-মােড সমস্যা নামে পরিচিত

**বিস্তার পরিমাপ: কোনাে নিবেশনের কেন্দ্রীয় মান হতে অন্যান্য মানগুলাের ব্যবধান গাণিতিকভাবে পরিমাপ করা হলে তাকে বিস্তার পরিমাপ বলে।

**যথার্থতা নির্ণয়ের পদ্ধতি: ৪ (চারটি)।

**পরিসংখ্যান কী: কোনাে বিষয়ের সংখ্যাত্মক তথ্য সংগ্রহ, উপস্থাপন, বিশ্লেষণ ও বিশদ ব্যাখ্যা করারে পরিসংখ্যান বলে।

**সসীম সম্যক কী: যে সম্যকের উপাদান গণনার সীমার মধ্যে থেকে

তাকে সসীম সম্যক বলে।

**অসীম সমগ্রক কী: যে সম্যকের উপাদান গণনার সসীমার মধ্যে থাকে না তাকে অসীম সম্যক বলে।     

**মাধ্যমিক তথ্য : অনুসন্ধানের ক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য থেকে যদি বর্তমান অনুসন্ধানের উপযােগী তথ্য সংগ্রহ করা হয়

তাকে মাধ্যমিক তথ্য বলে।

**পরিসাংখ্যিক সারণি: কোনাে বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে সমজাতীয় বিবেচিত এককগুলােকে একটি শ্রেণিতে সাজিয়ে লিখলে যে সারণি পাওয়া যার তাদেরকে পরিসাংখ্যিক সারণি বলে।

**নির্ভরশীল চল : অনির্ভরশীল চল উপস্থাপন করার ফলে যে পরিবর্তন সৃষ্টি হয় তাকে নির্ভরশীল চল বলে।

**মধ্যবর্তী চল : যে চল অনির্ভরশীল ও নির্ভরশীল চলের মধ্যবর্তী

অবস্থায় থেকে এ দুটির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে তাকে মধ্যবর্তী চল বলে।

**অনপেক্ষ বিস্তার পরিমাপ চার প্রকার। যথা : (ক) নির্দিষ্ট বিষয়ের একক সাথে টেষ্ট, (খ) সার্ভে টেস্ট ব্যাটারী, (গ) ক্রুটি লিনয়িক অভীক্ষা ও (ঘ) ভবিষৎ সাফল্য-নির্ধারণ অভীক্ষা।

**বিভেদাংক কী:কোনাে নিবেশনের পরিমিত ব্যবধানকে গাণিতিক গড় দ্বারা ভাগ করে শতকরায় প্রকাশ করা হলে তাকে বিভেদাংক বলে।

*পরিমাপনের স্কেল ৪টি

**পরিমাপনের মৌলিক স্বতঃসিদ্ধ ৯টি।

**DAT এর পূর্ণরূপ Differential Aptitude Test Battery.

**গুণবাচক উপাত্তের একটি উদাহরণ হলো শিক্ষাগত যোগ্যতা।

**পৌনঃপুন্য কি: বহুসংখ্যক পরিমাপকে কতকগুলাে শ্রেণিতে ভাগ করা হলে এবং প্রত্যেক শ্রেণিকে কতগুলো উপাত্ত রয়েছে, তা গণনা করা হলে প্রত্যেক শ্রেণির গণনাকৃত উপাত্ত সংখ্যাকে পৌনঃপুন্য বলা হয়।

**কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপগুলো কী: ৩ প্রকার। যথা : গড়, মধ্যক ও প্রচুরক

**x = Mdn = Mode' বণ্টনের কোন অবস্থা নির্দেশ করে: উক্ত সমীকরণ দ্বারা বণ্টনের গড়, মধ্যক ও প্রচুরকের মান সমান বােঝায়। অর্থাৎ বণ্টনটি সুষম নিবেশন অবস্থা নির্দেশ করে।

**সংখ্যা কি: বিশ্ব বিখ্যাত গণিতবিদ বার্ট্ান্ড রাসেলের মতে সংখ্যা হলাে সকল শ্রেণির শ্রেণি।

**পরিমাপন কী: পরিমাপন হলাে নিয়মানুসারে বিভিন্ন নিরীক্ষণ বস্তু বা ঘটনাবলিতে অর্থপূর্ণ এবং স্বীকৃত সংকেত চিহ্ন বা সংখ্যামূলক সংকেত চিহ্ন প্রদান করার প্রক্রিয়া।

**MMPI-Minnesota Multiphasic Personality.

**নকশা : গবেষণায় যখন পরীক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তখন যে ধরনের নকশা তৈরি হয় তখন তাকে পরীক্ষণমূলক নকশা বলে। কোনাে বস্তুর বাহ্যিক আকারকেই নকশা বলে। কোনাে বস্তুর নিয়মতান্ত্রিক পরিবর্তনকেই আমরা নকশা হিসেবে উল্লেখ করতে পারি।

**উপাত্ত কী: অনুসন্ধানের জন্য সমগ্রক থেকে সংগৃহীত কাঁচামালই

হলাে উপাত্ত বা তত্ত্ব।

**পরিসংখ্যানের শ্রেণিবিভাগ ৩টি।

**শ্রেণি ব্যবধান কী: অবিচ্ছিন্ন গণসংখ্যা নিবেশনে কোনাে শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত নিমুনসীমা এবং উচ্চসীমার মধ্যকার পার্থক্যকে ঐ শ্রেণির শ্রেণি ব্যবধান বলে।

**আদর্শমান: আদর্শমান বলতে বােঝায় একটি বিশেষ বয়সের দল বা একটি ছাত্রদের গড় সাফল্যান্ককে বাঝায়।

**গড় বিচ্যুতি হলাে বীজগাণিতিক চিহ্ন বর্জন সাপে সকল বিচ্যুতির গাণিতিক গড়।

**পরিসর : সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মানের বিয়ােগফলই পরিসর।

**পরিমাপনের স্কেল ৪টি। যথা- নামসূচক, ক্রমসূচক, শ্রেণিসূচক, অনুপাতসূচক স্কেল।

**একটি বুদ্ধি অভীক্ষার নাম লিখ:বিনে সাইমন বুদ্ধি অভীক্ষা

**একটি ব্যক্তিত্ব অভীক্ষার নাম হলাে সামাজিকতা

** মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা হল কোন একশ্রেণীর আবরণের

ব্যক্তি-নিরপেক্ষ ও মানােন্নত পরিমাপ |

**গড়, মধ্যমা, প্রচুরক কখন এক বিন্দুতে মিলিত হয়: দুই বা ততােধিক নিবেশনের সংখ্যাগুলি ভিন্ন হলে তাদের গড়, মধ্যমা, প্রচুরক এক বিন্দুতে মিলিত হয়।

** DAT-Differential Aptitude Test Battery.

**গুণবাচক উপাত্তের একটি উদাহরণ হলাে শিক্ষাগত যােগ্যতা।

**পৌনঃপুন্য: বহুসংখ্যক পরিমাপকে কতকগুলাে শ্রেণিতে ভাগ করা হলে এবং প্রত্যেক শ্রেণিকে কতগুলাে উপাত্ত রয়েছে, তা গণনা করা হলে প্রত্যেক শ্রণির গণনাকৃত উপাত্ত সংখ্যাকে পৌনঃপুন্য বলা হয়।

**নির্ভরযােগ্যতার সর্বোচ্চ মান .৫০ হতে পারে

**মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা হলাে কোন একশ্রেণীর আবরনের ব্যক্তি-নিরপেক্ষ ও মানােন্নত পরিমাপ ।

** EPPS এর পূর্ণরূপ হলাে Esward personal prefernce schedule.

** শতমক: কোনাে তথ্যসারির চলকের মানগুলােকে ক্রমানুসসারে সজানাের পর সমান একশটি ভাগে বিভক্ত করলে তাকে শতমক বলে। স্

**পরিমাপন হলাে নিয়মানুসারে বিভিন্ন নিরীক্ষণ বস্তু

**গড়, মধ্যমা, প্রচুরক ছাড়া আরাে ৩ ধরনের গড় রয়েছে সেগুলাে হলো: ১.গুণিতিক গড়, ২. তরঙ্গ গড় এবং ৩, দ্বিঘাত গড়।

**পরিসর কী: কোনাে বণ্টনের বৃহত্তম সংখ্যা ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যার ব্যবধান বা পার্থক্যকে পরিসর বলে।

**গড় বিচ্যুতির সুবিধা কী : গড় বিচ্যুতি নির্ণয় করা তুলনামূলকভাবে সহজ।

**পরিমাপনের পর্যায় চারটি।



** নমুনার সামগ্রিক রূপ বলতে সকল নমুনার একত্র রূপকেই বুঝায়।

**TAT  : Thematic  Apperception  Test.

**গবেষণা প্রতিবেদন: কোনাে গবেষণা যখন শেষ করা হয় তখন ভাকে লিখিতভাবে সংরক্ষণ করতে হয়, একেই বলে গবেষণা প্রতিবেদন।

**গবেষণার প্রতিটি স্তরে প্রয়ােজন পড়ে কোন শাখার: পরিসংখ্যান।           

** সমরুপতা কী: কোনাে বিতরণের সাফল্যাঙ্কসমূহ যদি কাছাকাছি থাকে তবে সেই উপাত্তকে বলা হয় সমরুপতা।

**গবেষণা নকশার কাজ হলাে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করা, যার মাধ্যমে কোনাে কিছু খুঁজে বের করা হয়।

** "মূল্যায়ন শব্দটি ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক আলােচনা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আধুনিক পরিমাপ পদ্ধতিসমূহকে বুঝায়" -উক্তিটি কেলীর উক্তি।

 

**অভ্যন্তরীণ উপাত্ত কী: কোনাে প্রতিষ্ঠানের ভিতর হতে নিজস্ব ব্যবহারের জন্য যে উপাত্ত সংগৃহীত হয় তাকে অভ্ান্তরীণ উপাত্ত বলে।

**বৈজ্ঞানিক গবেষণার নকশাকে গবেষণার র্হৎপিন্ড বলা হয়।

**পরিসংখ্যানের প্রধান কাজ হলো তথ্যসংগ্রহ করে তাকে সংখ্যার স্বারা প্রকাশ করা।

** আয়ত লেখ কী?: যে লৈখিক চিত্র দ্বারা গণসংখ্যা নিবেশনকে সমান্তরাল রেখার উপর লম্বালম্বিভাবে অঙ্কন করা হয় এবং পরস্পর সংযুক্ত আয়তক্ষেত্র স্বারা প্রকাশ করা হয় তাকে আয়ত লেখ বলে।

** নাম সূচক স্কেল : নাম সূচক স্কেল হলাে মূলত একটি নামকরণ প্রক্রিয়া।

** সারণি বিন্যাস: উপাত্তের সুবিন্যস্ত সারণি বা ছকের মাধ্যমে প্রকাশ পদ্ধতিকে সারণি বিন্যাস বলে।

**মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা কাকে বলে: মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা হল কোনাে একশ্রেণির আবরণের ব্যক্তি-নিরপেক্ষ ও মানােন্নত পরিমাপ ।

**:কৃতি অভীক্ষা চার রকম প্রকার যথা :

(ক) নির্দিষ্ট বিষয়ের একক সাথে টেষ্ট,

(খ) সার্ভে টেস্ট ব্যাটারী,

(গ) ক্রুটি লিনয়িক অভীক্ষা ও

(ঘ) ভবিষৎ সাফল্য নির্ধারণ অভীক্ষা।

**স্বাভাবিক বণ্টন রেখা নিয়ে প্রথম কবে বই প্রকাশিত হয়: ১৭৩৩ সালে।

**বিনে সাইমন বুদ্ধি অভীক্ষা তৈরি করেন মনােবিজ্ঞানী আলফ্রেল বিনেও থিওফিল সাইমন।

**রোশাক কালির ছাপ অভীক্ষা ১৯২১ সালে প্রণীত হয়।

**রোশাক কালির ছাপ অভীক্ষায় ১০টি ও কার্ড আছে।

 

**নামভিত্তিক মাপক : নামভিত্তিক মাপক মূলত একটি নামকরণ। এ পর্যায়ে কোনাে বস্তু, বিষয় বা অবস্থার নাম লেভেলের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণ করা হয়। যেমন- স্কুলে প্রথম শ্রেণি হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সংখ্যা প্রদানের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়।

সি.আর কোথারি এর মতে,নামসূচক স্কেল সাধারণভাবে একটি পদ্ধতি যাতে সংখ্যার প্রতীকসমূহকে নির্দিষ্ট করার জন্য লেবেল প্রদান করা হয়। খক্তুত নামসূচক স্কেলে সংখ্যা, লেবেল বা প্রতীক ব্যবহারের মাধ্যমে বস্তু, ব্যক্তি, অবস্থা বা সামাজিক প্রপঞ্চকে শ্রেণীকরণ করে পরিমাপ করা হয়। যেমন- ধর্মের ভিত্তিতে কোনাে একটি  এলাকার জনগােষ্ঠীকে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এই চারটি ভাগে ভাগ করা যায়।

**পরিমাপন ও মূল্যায়নের সংজ্ঞা দাও। পরিমাপন ও মূল্যায়নের মধ্যে অমিল খুঁজে বের কর।

*পরিমাপন : মনােবিজ্ঞানের তথ্য সমূহকে পরিমাপের ভাষায় প্রকাশ করা হয়। কোনাে বিশেষ নিয়মানুসারে বস্তু বা ঘটনাকে সংখ্যার সাহায্যে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াকে পরিমাপ বলে। যেমন, বুদ্ধি, বয়স, উচ্চতা প্রভৃতি বিষয়কে অংকের সাহায্যে পরিমাপ করা যায়।

G. R. Adams এবং J. D. Schavaneveldt মতে, "পরিমাপ হলাে একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা সমাজে ঘটমানবিভিন্ন ঘটনা বা বস্তুর আকার, ওজন, গভীরতা, প্রভাব, ফলাফল অথবা গুরুত্ব সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

*মুল্যায়ন : মূল্যায়ন শব্দটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন- কোনাে বন্তুর বা দ্রব্যের মূল্যায়ন হলাে ঐ বস্তুর আকার, আকৃতি, ওজন ইত্যাদির বিচারবিশ্লেষণ করা। ব্যক্তি সম্পর্কে মূল্যায়ন বলতে বুঝায় ব্যক্তির দৈহিক ও মানসিক বিকাশ, শিক্ষা, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রভৃতি গুণাবলির বিশ্লেষণ মনােবিজ্ঞানীদের মতে, "মূল্যায়ন হলো বযক্তির দৈহিক, মানসিক সামাজিক, অর্থনৈতিক, নৈতিক ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যাসমূহ শিক্ষার মাধ্যমে বিকশিত হয় এবং সেগুলাে সামগ্রিকভাবে বাকি জীবনে কতটুক প্রভাৰ বিস্তার করে তার পরিমাপ ও বিচারবিশ্লেষণকে মূল্যায়ন বলে।

 

*পরিষাপন ও মূল্যায়নের মধ্যে পার্থক্য : নিম্নে মূল্যায়ন ও পরিমাপনের পার্থক্যের বর্ণনা করা হলো:

প্রতমত,মতামত ব্যক্ত করা থেকে শুরু করে কোনাে অতীক্ষার দ্বারা ব্যক্তির গুণাবলি পরিমাপকার্য সম্পর্কিত

পক্রিয়াকে মূল্যায়ন বলে। সহজে বলা যায় ব্যক্তির বৈশিষ্টা সম্পর্কে ওণগত বর্ণনা হলাে মূল্যায়ন, পক্ষান্তরে পরিমাণগত বা সংখ্যাভিত্তিক মূল্যায়নকে বলা হয় পরিমাপন।

দ্বিতীয়ত, মূল্যায়নে ব্যক্তির বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনামূলকভাবে প্রকাশিত হয়। পক্ষান্তরে পরিমাপনে ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য

সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। যেমন- আমরা যদি বলি ছেলেটি বুদ্ধিমান এটি মূল্যায়ন। আর যদি বলি তার বুদ্ধ্যাঙ্ক ১১০। এটি হলাে পরিমাপন।

 

**যোজিত গড়ের ব্যবহার :

১.নিত্যদিনের জীবনব্যবস্থায় : যােজিত গড়ের উপযােগিতাসমূহ থেকে সহজেই বুঝা যায় এই কেন্দ্রীয় পরিমাপটি প্রতিদিনের জীবনব্যবস্থায় ব্যবহার করা যায়। যেমন- গড় আয়-ব্যয়, গড় উৎপাদন ইত্যাদি।

২.সমাজ গবেষণা কর্মে: সমাজ গবেষণা কর্মে এর ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। যেমন : গবেষণা লক্ধ তথ্যের গড় পরিমাপ বের করা।

৩.উচ্চতর গাণিতিক কর্মে : উচ্চতর গাণিতিক কর্মে এর ব্যবহার রয়েছে

৪.সূচক সংখ্যা নির্ণয়ে : বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সূচক সংখ্যা নির্ণয়ে যােজিত গড় ব্যবহার হয়।

৫.পরিসংখ্যানিক নমুনা বিন্যাসের ক্ষেত্রে: পরিসংখ্যানিক গবেষণা কর্মের নমুনা পর্যবেক্ষণে যােজিত গড় ব্যবহার করা হয়।

.কালীন সারির ক্ষেত্রে : কালীন সারি বিশ্লেষণে যােজিত গড় কাজে লাগে ।

.সম্ভাবনা বিন্যাসে:পরিসংখ্যানিক কর্মের সম্ভাবনা বিন্যাস ও বিভিন্ন অভীক্ষায় যােজিত গড় ব্যবহার করা হয়।

, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে : অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এর যথেষ্ট ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।

.বাণিজ্যিক গবেষণায় : বাণিজ্যিক গবেষণায় এর প্রচুর ব্যবহার রয়েছে।

১০. পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে : পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে গড়ের ব্যবহার দেখা যায়।

১১. সহ-সম্পর্কের কষেত্রে : সহ-সম্পর্কের ক্ষেত্রে গড়ের ব্যবহার রয়েছে

**নকশা :  সাধারণভাবে কোনাে পরীক্ষণের পরিকল্পনা একটি নির্দিষ্ট ছক আকারে প্রকাশ করা হলে তাকে নকশা বলে। নকশার মাধ্যমে একটি গবেষণার অন্তর্ভুক্ত পর্যায়গুলাে সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। নকশার মূল অর্থ হলাে পরিকল্পনা। অর্থাৎ একটি পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়ার পুর্বেই ঐ পরিস্থিতি কার্যকর করার উপর্যুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াই হলাে নকশা।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা ।

*নকশায়নের বৈশিষ্ট্যসমূহ :

১. নিরপেক্ষ ও সাপেক্ষ চলের অবস্থান নির্ণয় : নিরপেক্ষ ও সাপেক্ষে চল ইতিবাচক বা ভালাে চল বলে সবসময়ই বিবেচিত। এছাড়া এর মাধ্যমে বাহ্যিক চল ও অভ্যন্তরীণ চলের নিয়ন্তরণ কৌশলও অনেকটা সহজে নির্ণয় করা যায়।

, ভুলভ্রান্তি পরিহার : নকশায়নের মাধ্যমে যেকোনাে প্রকার ভুল দৃশ্যমান হলে তা সহজ উপায়ে সমাধান করা যায়। কারণ উত্তম নকশায়নে সবকিছুই স্পষ্টভাবে

উল্লেখ থাকে।

.তথ্য-উপাত্তের চুলচেরা বিশ্লেষণ : উ্তম নকশায়নের আরেকাটি অন্যতম বােশিম্ট্য হলাে এখানে সন্নিবেশিত সর প্রকার তথ্া-উপত্তের চুলচেরা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা যায়। এক্ষেত্রে গবেষক বা প্রশিক্ষিত ব্যক্তি সংগৃহীত তথ্যের যখাখ বিচারবিশ্লেষণ করতে পারে।

৪. সংক্ষিপ্ততা : উত্তম নকশার আরেকটি বৈশিষ্টা হলাে সংক্ষিপ্ততা। অর্থাৎ গবেষণায় কর্মটি সব্যবস্থায় সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করতে হবে। কেননা এতে নকশা সম্পর্কে অল্প সময়ে ধারণার্জন সম্ভব হয়।

৫. পরীক্ষক সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য স্নিবেশিত : উত্তম নকশার আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলাে এখানে গবেষক, বা পরীক্ষক সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যাবলি সন্নিবেশিত থাকে। যার ফলে গবেষণা কর্ম পরিচালনাকারী বাক্তির কর্মদক্ষতার অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যােগাতাসহ অন্যান্য বিষয়াবলি এখানে ফুটে ওঠে।

৬. ছকাকারে প্রকাশ :নকশায়ন প্রক্রিয়া যেহেতু একটি সংক্ষিপ্ত প্রক্রিয়া সেহেতু এটিকে এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে ছকের মতাে দেখা যায়। অর্থাৎ গবেষণা কর্মটি ছকাকারের মাধ্যমে এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে গবেষণাকর্ম সহজে ফুটে ওঠে

৭. প্রকল্পের প্রমাণস্বরূপ : উত্তম নকশার আরেকটি বৈশিষ্টা হলাে এর মাধ্মে প্রকল্পের সব প্রমাণ করা যায়। এক্ষেত্রে প্রকল্পটিকে ইতিবাচক ও নেতিবাচক এবং ধনাত্মক ও ঋণায্মকভাবে সাজানাের সুযােগ থাকে।

৮. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন :একজন গবেষক যখন তার গবেষণা কর্মটি পরিচালনা করে তখন সে ইচ্ছা পােষণ করে তার কর্মটি অনাের নিকট সুন্দর ও তথ্যপ্রমাণসহ উপস্থাপন করা। এছাড়া গবেষক একটি ছকের আকারে প্রকাশ করে তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়ন করতে চায়।

৯. বান্তবে গ্রহণযােগ্যতা বৃদ্ধি :নকশা প্রণয়নের মাধ্যমে গবেষণা কর্ম পরিচালনা করা সহজ এবং আশানুবূপ ফল লাভ করা যায়। কিন্তু গবেষণা কর্মের বাইরে নকশা প্রণয়ন করলে তার গ্রহণযােগযতা হারায়।

১০. পুনরাবৃত্তি পর্যালােচনা ও মূল্যায়ন : নকশা প্রণয়নের পর তা কতটুকু যথােপযুক্ত তার জন্য নকশা পুনরাবৃত্তি, পর্যালােচনা ও মূল্যায়ন করা হয়ফলে নকশার কোনাে প্রকার সমস্যার উদ্ভব হলে তা সহজে সমাধান করা যায়

**কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপের সংজ্ঞা দাও।

কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ : কোনা তথ্যসারির মধ্যক মান বা কেন্দ্রীয় মানের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য যেসব গাণিতিক পরিমাপ ব্যবহার করা হয়, তাদেরকে কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ বলা হয়। অর্থাৎ তথ্যসারির এ কেন্দ্রীয় মানের গাণিতিক পরিমাপকে কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ বলে। যেমন- গড়, মধ্যমা, প্রচুরক ইত্যাদি কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ।পরিসংখ্যানবিদ সিম্পসন ও কাফকা এর মতে, কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ হচে্ীয় প্রবণতার পরিমাপ হচ্ছে প্রতিনিধিত্বকারী মান যার চারদিকে অন্যান্য মানগুলো জড়ো হয়।

**একটি  ভাল নকশার বৈশিষ্ট্য : নকশা হলাে গবেষণার যৌক্তিক এবং নিয়মতান্ত্রিক পরিকল্পনা ও নির্দেশনা। নিশ্নে একটি ভাল নকশার বৈশিষ্ট্য বা গুরুত্ব উল্লেখ করা হলাে ।

১. পরীক্ষণের নকশাটি এমন হবে যাতে গবেষণাধীন সমস্যার জন্য সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়।

২. সংগৃহীত উপাত্তের স্থায়ী ভুল দূর করা যায়।

৩. নকশাটি এমন হবে যেনাে পরীক্ষণের প্রকল্পটিকে গ্রহণ বা বর্জন করা যায়।

৪. গবেষণা নকশার এমন বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে যাতে সংগৃহীতি তথ্যের Random crror কম হয় এবং ভূলের পরিমাণ নির্ণয় করা যায়।

৫. একটি ভাল নকশাকে গবেষণার উদ্দেশ্যের সাথে সম্পর্কিত হতে হবে।

৬. প্রকল্প প্রণয়নের লক্ষ্যে কোনাে ঘটনাকে ভালভাবে জানা বা ঐ ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা।

৭. কোনাে বিশেষ দল বা ব্যক্তির বৈশিষ্ট্যসমূহকে সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণনা করা।

৮. কোনাে ঘটনা ঘটার সংখ্যা বা অন্য বিষয়ের সাথে ঐ ঘটনার অনুষঙ্গের পরিমাণ নির্ণয় করা।

, দুই বা ততােধিক চলের মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক নিরূপণের জন্য প্রকল্প যাচাই করা।

 

**পরিমাপের মৌলিক স্বতঃসিদ্ধগুলাে আলােচনা কর।

 

পরিমাপনের মৌলিক স্বতঃ্নসিদ্ধসমূহ : সংখ্যার বিভিন্ন প্রকার বৈশিষ্ট্যকে পর্যালােচনা করে ১৯৩৮ সালে মনােবিজ্ঞানী ক্যাম্পবেল পরিমাপনের নয়টি মৌলিক স্বতঃ্সিদ্ধ উদ্ভাবন করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পবেলের অনুসরণে স্টিভস, হেলেনস, রিজ নয়টি মৌলিক স্বতঃসিদ্ধকে বিভিন্নভাবে পরিবর্তন করেছেন। নিম্নে পরিমাপনের মৌলিক স্বতঃ্নসিদ্ধসমূহ আলােচনা করা হলাে :

প্রথম স্বতঃসিদ্ধ : a=b অথবা ab (<খ এর সমান অথবা সমান নয়)। এ স্বতঃসিদ্ধটি সাধারণত একটি সংখ্যারঅভেদ প্রতিষ্ঠিত করে থাকে। যার ফলে সংখ্যাগুলাে হয়তাে অভিন্ন হবে অথবা ভিন্ন হতে পারে।

দ্বিতীয় স্বতঃসিদ্ধ: যদি a=b হয় তবে b=a হবে। যদি b এর সমান ইয় তাইলে b,a এর সমান হবেএক্ষেত্রে সমতা সম্পর্কে একট বাক্য বিপরীতভাবে বলা যায় এবং তাতে সত্যের কোনাে পরিবর্তন হয় না।

তৃতীয় স্বতঃসিদ্ধ: যদি a=b হয় এবং b=c হয় তাহলে a=c সমান হবেএক্ষেত্রে a যদি b এর সমান হয় তাহলে, এর সমান ও a, c এর সমান হবে।

চতুর্থ স্বতঃসিদ্ধ: যদি a<b হয় তবে b>a হবে। অর্থাৎ a যদি b এর চেয়ে বড় হয় তাহলে b,a এর চেয়ে ছোেট হবে।

পঞ্চম স্বতঃসিদ্ধ: যদি a>b এবং b>৫ হয় তবে a>৫ হবে। অর্থাৎ, a, b এর চেয়ে বড় হলে চ,c এর চেয়ে বড় হবে এবং a,c এর চেয়ে বড় হবে।

যষ্ঠ স্বতঃসিদ্ধ: যদি a=p এবং b>0 হয় তবে ॥+b>P হবেঅর্থৎ ক=p হয় এবং খ এর মান শূন্য থেকে বড়হয় তাহলে বুঝতে হবে যে ক ও খ এর যােগফল p এর মানের চেয়ে বড় হবে।

সপ্তম স্বতঃসিদ্ধ; যদি b=b+a হয়। অর্থাৎ ক+খ=খ+ক হয়। এক্ষেত্রে যদি b=b+a মান হয় তাহলে ক+খ=খ+ক সমান হবে।

অষ্টম স্বতঃসিদ্ধ: যদি a=p হয় এবং b=q হয় তাহলে a+b=p+q লেখা যায় অর্থাৎ ক=চ হলে খ=ছ হয় তাহলে ক+খ=চ+ছ লেখা যায়।

নবম স্বতঃসিদ্ধ: (a+b)+c=a+(b+c) হয় তাহলে (ক+য)+গ=ক+(খ+গ) দেখা যায়। এ স্বতঃসিম্ধটিতে বলা হয়েছে যে, যােগকরণ প্রক্রিয়া কোনাে বস্ধু বা ঘটনাকে যখন যেকোনাে প্রক্রিয়ায় এক্রীকরণ করা হােক না কেন তাতে যােগফলের কোনােপ্রকার তারতম্য লক্ষ করা যায় না। অর্থাৎ সংখ্যার মানগুলাে সবসময় অপরিবর্তীত থাকে।

** পদ বিশ্লেষণ : পদ বিশ্লেষণ হচ্ছে কিছু গাণিতিক কৌশলের প্রয়ােগ যেগুলার মাধ্যমে কোনাে অভীক্ষার জন্য উপযুক্ত ও যথার্থ পদসমূহ নির্বাচন করা হয়। যে কোনাে পদকেই অভীক্ষার জন্য নির্বাচন করা যায় না। অভীক্ষাকে যথার্থ ও নির্ভরযােগ্য হতে হলে অভীক্ষার পদসমূহকেও নির্ভরযােগ্য ও যথার্থ হতে হয়। পদসমূহ এমন হবে যেন সেগুলাে নিম্নক্ষমতার ব্যক্তি ও উচ্চ ক্ষমতার ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। অভীক্ষার পদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বিচার বিবেচনা অপেক্ষা গাণিতিক বিচার বিশ্লেষণ অধিক গ্রহণযােগ্য।

উপসংহাের : সবশেষে বলা যায় যে, কোনাে অভীক্ষার উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারে এমন ধরনের ভালাে পদ নির্বাচনের ক্রিয়াই হলাে পদ বিশ্লেষণ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কোনাে অভীক্ষার প্রধান অবলম্বনই হলো সেই অভীক্ষার নির্ভরযােগ্যতা। তাই অভীক্ষাকে সহজ করতে সমদ্বিখণ্ডের গুরুত্ব অপরিসীম

** নির্ভরযোগ্যতা নির্ণয়ের সমদ্বিখন্ড পদ্ধতির সুবিধা : নিম্নে সমদ্বিখণ্ড পদ্ধতির সুবিধাসমূহ আলােচনা

করা হলাে :

১. এ পদ্ধতিতে নির্ভরযােগ্যতা নির্ণয় করা অপেক্ষাকৃত সহজ।

২. এ পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

৩. অনেক সময় এক দল অভীক্ষার্থীকে দ্বিতীয়বার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এসব ক্ষেত্রে সমদ্বিখণ্ড পদ্ধতিই প্রয়ােগ করা সহজ।

৪. অনেক সময় একটি অভীক্ষার বিকল্পরূপ তৈরি করা ব্যয় সাপেক্ষ, তাই একটি অভীক্ষাই তৈরি করা হয়।

**অথবা, মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ।

০ মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার বৈশিষ্ট্যসমূহ : নিম্নে মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার কতিপয় বৈশিষ্ট্য সম্পর্ক উল্লেখ করা হলাে :

১. বাক্তির আচরণ পরিমাপ : মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার অন্যতম বৈশিষ্ট্যা হলাে ব্যক্তিুর আচরণ পরিমাপ করা। যেমন-বুদ্ধি অভীক্ষা, ভাষাগত অভীক্ষা, ব্যক্তিত্ব অভীক্ষা প্রভৃতি। এসব অভীক্ষাটি কতটুকু বাস্তবতা নির্ভর তা ব্যক্তির ভালাে আচরণের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল।

২. বস্তুনিষ্ঠতা বা নৈর্ব্যক্তিকতা : বস্তুনিষ্ঠতা হলাে পরীক্ষকের ব্যক্তিগত উপাদান। যেমন-ভালাে মনােভাব, চিন্তা ধারা, বিশ্বাস এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা প্রভৃতি। যার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর সাফাল্যা্ক প্রভাবিত হবে না। একমাত্র পরীক্ষার্থীর বৈশিষ্ট্যের তারতমাের কারণে অভীক্ষার সাফল্যাঞ্কের তারতম্য ঘটবে।

৩. আদর্শমান : কোনাে একটি অভীক্ষার আদর্শমান হলাে এমন একটি নির্দিষ্ট প্রতিনিধিত্ৃশীল সংখ্যা বা মূল্যমান যা দ্বারা অভীক্ষার বিভিন্ন সাফল্যাঙ্কের তুলনা করা এমনকি প্রয়ােজনে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা হয় যেমন- গ্রেডভিত্তিক আদর্শমান, বয়সভিত্তিক আদর্শমান প্রভৃতি।

৪. নির্ভরযােগ্যতা :কোনাে একটি অভীক্ষা পরিচালনা করে যদি একই দলের ওপর অল্প কয়েকদিন ব্যবধানে পরপর দুবার করা হয় এবং যদি দেখা যায় যে, অভীক্ষার্থীদের মধ্যে এ দুবারের ক্কোরের মধ্যে বেশ কিছুটা মিল বা সামঞ্জস্য বিধান রয়েছে তাহলে বুঝতে হবে যে অভীক্ষাটি নির্ভরযােগ্য।

৫. মান নির্ণয়ের সুবিধা :যেসব অভীক্ষাগুলাে প্রয়ােগের দিক দিয়ে অনেকটা সুবিধাজনক সেগুলাে আবার পরীক্ষণের দিক দিয়ে সহজ হয়। তাই যেসব ক্ষেত্রে যান্ত্রিক উপায়ে মান নির্ণয় করা হয় সেসব ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ট অভীক্ষা ব্যবহার করা ছাড়া কোনাে উপায় নেই।

৬. যথার্থতা : যে উদ্দেশ্য নিয়ে অভীক্ষাটি তৈরি করা হয়েছে মূলত সেটি কি সেই বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করছে কিনা তা নির্ধারণ করাই হলাে অভীক্ষার যথার্থতা। তবে সবক্ষেত্রে অভীক্ষার যথার্থতা এক হতে পারে না। যেমন প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীলতা পরিমাপের ক্ষেত্রে যে অভীক্ষাটি ব্যবহার করা হয় তা হয়তাে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে অভীক্ষাটি যথার্থ নাও হতে পারে।

**মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা নির্মাণের ধাপগুলাে উল্লেখ কর।

মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা নির্মাণের ধাপ : নিচে অভীক্ষা নির্মাণের ধাপগুলাে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলাে ১. প্রাথমিক ধারণা গঠন,

২. প্রশ্নের ধরন নির্ধারণ করা,

৩. খসড়া তৈরি করা,

৪. পদের কার্যকারিতা বিচার বা প্রথম প্রয়ােগ,

৫. বিষয়বস্তুর যাচাইকরণ,

৬. পরীক্ষামূলক প্রয়ােগ,

৭. পদ বিশ্লেষণ,

, অভীক্ষার সর্বশেষ রূপদান,

৯. যথার্থতা নির্ণয়,

১০. আদর্শমান নির্ণয়।

 

**মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার বৈশিষ্ট্য : নিম়নে একটি ভালাে অভীক্ষার কৌশলগুলাের নাম লিপিবদ্ধ করা হলাে। যথা-

১. আচরণের পরিমাপ : মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার একটি বৈশিষ্ট্য হলাে আচরণের পরিমাপ করা। যেমন- ভাষাগত ক্ষমতার অভীক্ষা, বুদ্ধি অভীক্ষা, ব্যক্তিত্ব অভীক্ষা ইত্যাদি। অভীক্ষাটি কত খানি উপযুক্ত হবে তা নির্ভর করবে কত ভালােভাবে আচরণের কতকগুলাে নমুনা নেওয়া হয়েছে। তার উপর Anastasi উদাহরণস্বরূপ বলেছেন, "একটি শব্দ ভাণ্ডার পরিমাপক অভীক্ষায় শুধুমাত্র বেসবল খেলার শব্দগুলাে অন্তর্ভুক্ত করা হলে একটি শিশুর সামগ্রিক শব্দ ভাণডার সম্পর্কে নির্ভরযােগ্য পরিমাপ পাওয়া যাবে না।"

২. বন্তুনিষ্ঠতা বা নৈর্ব্যক্তিকতা : মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলাে নিষ্ঠতা বা নৈর্ব্যক্তিকতা। অভীক্ষার বস্তুনিষ্ঠতার মূল কথা হলাে পরীক্ষকের ব্যক্তিগত উপাদান যেমন- তার মনােভাব, বিশ্বাস, পূর্বসংস্কার ইত্যাদি দ্বারা অভীক্ষার্থীর অভীক্ষার সাফল্যাঙ্ক প্রভাবিত হবে না।

৩. নর্ম বা আদর্শমান : নর্ম বা আদর্শমান ছাড়া অভীক্ষার সাফল্যাঙ্ক বা ফলাফল সঙ্গতিপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না।কোনাে অভীক্ষার নর্ম হলাে এমন একটি আদর্শমান বা প্রতিনিধিত্বশীল সংখ্যা বা মূল্যায়ন যার সাথে

অভীক্ষার বিভিন্ন সাফল্যান্কের তুলনা এবং যার সাহায্যে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা যায়।

৪. নির্ভরযােগ্যতা : কোনাে ভালাে অভীক্ষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলাে এর নির্ভরযােগ্যতা। Guilford বলেন, "কোনাে অভীক্ষার দু'বার প্রয়ােগের ফলে যে দু'প্রাপ্ত সাফল্যাঙ্ক পাওয়া যায় তাদের মধ্যে সঙ্গতির মাত্রা যত বেশি হবে অভীক্ষাটিকে তত বেশি নির্ভরযােগ্য বলা হবে।

৫. যথার্থতা : কোনাে অভীক্ষার যথার্থতা বলতে বুঝায় অভীক্ষাটি যে বৈশিষ্ট্য বা আচরণ পরিমাপ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে যদি তাই পরিমাপ করে তবে তাকে যথার্থ অভীক্ষা বলা যায়।

৬. ব্যবহার যােগ্যতা : ব্যবহার যােগ্যতা ভালাে অভীক্ষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কোনাে অভীক্ষার ব্যবহার যােগ্যতা নির্ভর করে নিম্নের শর্তের উপর : ক. ব্যয় সংক্ষিপ্ততা খ. সময় স্বল্পতা ও গ, স্কোরিং

৭. স্তর বিন্যাস : শিক্ষার্থীর বয়সের কথা বিবেচনা করে অভীক্ষা রচনা করতে হবে। তাছাড়া একই বয়সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধা ও কৃতিত্বের পার্থক্য থাকতে পারে। তাই এ ধরনের পার্থক্যের কথা চিন্তা করে স্তর অনুযায়ী প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা প্রয়ােজন।

, বাস্তবধর্মিতা : ভালাে অভীক্ষার একটি বৈশিষ্ট্য হলাে বাস্তবধর্মিতা। মানুষের জন্য অভীক্ষা প্রণয়ন করা হয়। তাই তাদের জীবন ধারার সাথে মিল রেখে অভীক্ষা প্রণয়ন করতে হবে।

 

** পরিসংখ্যান কাকে বলে?

পরিসংখ্যান হচ্ছে সংখ্যা বিষয়ক বিজ্ঞান। অতি প্রাচীনকাল হতে পরিসংখ্যানের যাত্রা শুরু হয়েছে। অর্থাৎ যেদিন থেকে মানবগােষ্ঠী ভাষা ব্যবহার করে আসছে সেদিন থেকেই পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমানে পরিসংখ্যান বলতে বিডিন্ন কলাকৌশল বা পদ্ধতির সমন্বয়ে় এমন একটি বিজ্ঞানকে সংখ্যা বা রাশি তথ্য নিয়ে পুঙ্খানুপুঞ্খ আলােচনা করে।

 পরিসংখ্যান হলাে যে কোনাে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত তথ্যের সংখ্যাত্মক বর্ণনা। পরিসংখ্যান সুশৃঙ্খল বিন্যাসিত প্রাকৃতিক অথবা সামাজিক প্রপঞ্চের পরিমাপ, গণনা বা অনুমান করা, যাতে সেগুলাের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক প্রকাশ পায়।সংখ্যাত্মক তথ্যসংগ্রহ, উপস্থাপন, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা প্রদানকে

পরিসংখ্যান বলে।

 

**বর্ণনামূলক পরিসংখ্যান : যেসব পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে বহুসংখ্যক উপাত্তকে সুবিন্যস্ত করা যায়। সাধারণ বৈশিষ্ট এবং ব্যতিক্রম ইত্যাদি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া যায় তাকে বর্ণনামূলক পরিসংখ্যান বলে। যেমন- পৌনঃপুন্যের টেবিল তৈরীকরণ, লেখচিত্রের উপস্থাপন এবং গড়, মধ্যমা, মােড, আদর্শ বিচ্যুতি প্রভৃতি গাণিতিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে পরীক্ষালক

উপাত্তের ব্যাখ্যা করা সহজতর হয়।।

 

**পরিসংখ্যানের বৈশিষ্ট্য : নিম্নে পরিসংখ্যানের বৈশিষ্ট্যগুলাে বর্ণনা করা হলাে

, পরিসংখ্যানে সংখ্যাত্মক প্রকাশ আবশ্যক : কোনাে গুণবাচক তথ্যকে পরিসংখ্যান হিসেবে গণ্য করা যায় না, এটি অবশ্যই সংখ্যাবাচক হতে হবে। যেমন- কোনাে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের ফলাফল ভালাে; এটি কোনাে পরিসংখ্যান হবে না। যদি বলা হয় পাসের হার ৭০% বা ৮০% তাহলে এটি পরিসংখ্যান হবে।

, পরিসংখ্যান একাধিক ঘটনার সমষ্টি : একটি বিচ্ছন্ন সংখ্যাকে পরিসংখ্যান বলা যাবে না, কিন্তু একাধিক সংখ্যাকে পরিসংখ্যান বলা যায়। যেমন- একজন ছাত্রের উচ্চতা ৫ ফুট; এটি কোনাে পরিসংখ্যান হলাে না। যদি বলা যায়, একদল ছাত্রের গড় উচ্চতা ৫ ফুট, তাহলে এটি পরিসংখ্যান হবে।

, পরিসংখ্যানের অনুসন্ধান কোনাে একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে হবে : পরিসংখ্যানের উদ্দেশ্য পূর্বনির্ধারিত হতে হবে এবং সেই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অনুসন্ধান ক্ষেত্রে হতে সংখ্যাত্মক তথ্যসংগ্রহ করতে হবে, তাহলে তাকে পরিসংখ্যান বলা যাবে।

ঘ. সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সাধারণীকরণ : পরিসংখ্যান অধ্যয়নের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এটি প্রয়ােজনীয় তথ্যসংগ্রহ করে এবং সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সাধারণীকরণ করে থাকে।

ঙ. সুশৃঙ্খলভাবে উপাত্ত সংগ্রহ : পরিকল্পনার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য উপাত্ত সঠিক, সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সংগ্রহ করতে হয়।

চ. পরিসংখ্যানিক তথ্য বহুবিধ কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয় : পরিসংখ্যান এমন একটি বিষয় যা ঘটনার সমষ্টি যা-কি না অনেক শক্তির ঘাতপ্রতিঘাতে প্রভাবিত হয়ে থাকে। যেমন- ধানের উৎপাদন সার, পানি, আলাে, আবহাওয়া, পরিচর্যা ইত্যাদি কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়।

, পরিসংখ্যান তুলনাযােগ্য ও সমজাতীয় হতে হবে ; পরিসংখ্যান এমনভাবে সংগ্রহ করতে হবে যেন এদের মধ্যে পারস্পরিক তুলনা করা যায় তাই পরিসংখ্যান সমজাতীয় বা সমপ্রকৃতির এবং সমতুল্য হতে হবে। যেমন- কতকগুলাে শিশুর বয়স, চালের মূল্য ইত্যাদি পরস্পর সম্পর্কহীন ও তুলনাযােগ্য নয়। সুতরাং এ ধরনের উপাত্ত নিয়ে পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তুলনা করা সম্ভব হবে না।

, সঠিক যুক্তিসঙ্গত আদর্শের স্বারা গণনা করতে হবে: পরিসংখ্যানিক গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সুতরাং ফলাফল নিরূপণে একটি যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ সঠিকতার মাত্রা বজায় রাখা দরকার।

**গণসংখ্যা নিবেশন ধাপ : গণসংখ্যা নিবেশনের ধাপ দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা :

.বিচ্ছিন্ন গণসংখ্যা নিবেশন : বিচ্ছন্ন গণসংখ্যা নিবেশন এক ধরনের সরল নিবেশন। বিজ্ছিন্ন বা বিরত গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুত করার জন্য যেসব পদ্ধত অনুসরণ করতে হয় সেগুলাে নিম্নে উল্লেখ করা হলাে :১. চলকের মান সাজানাে : প্রদত্ত এলােমেলাে বা অবিন্যস্ত তথাকে মানের ক্লমানুসারে সারণির বামদিকের কলামে সাজাতে হয়। কলামে একই তথ্য মাত্র একবারই উপস্থাপন করতে হয়।

১ ট্যালি মার্ক : গণনার সুবিধার জন্য প্রত্যেকটি তথ্যের পুনরাবৃত্তিকে খাড়া দাগ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। অতঃপর ঐসব তথ্য যে শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত সে শ্রেণির পার্শ্ে নির্দিষ্ট স্থানে প্রত্যেকটি তথ্যের জন্য একটি করে উল্লম্ব রেখা দিয়ে () চিহ্নিত করা হয়।

৩. গণসংখ্যা নির্ধারণ : প্রতিটি চলকের ট্যালি মার্ক গণনা করার পর গণসংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। গণসংখ্যা নির্মিত হলে গলসংখ্যা নিবেশনের কাজ সমাপ্ত হয়।। গণসংখ্যা কলামেই তথা সংখ্যাগতভাবে বিনাম্ত হয়।

, অবিচ্ছিন্ন গণসংখ্যা নিবেশন : বিভিন্ন স্তর বা পর্যায় অতিক্রম করার পর একটি অবিচ্ছিন্ন গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুত করা হয়। নিন্মে এসব পর্যায় ধারাবাহিকভাবে আলােচনা করা হলাে :

১. পরিসর নির্ণয় : অবিন্যম্ত উপাত্ত থেকে গণসংখ্যা নিবেশন প্রস্তুত করার জন্য প্রথমেই প্রদত্ত উপাত্তের বৃহত্তম সংখ্যা ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যামান নির্ণয় করে পরিসর নির্ণয় করতে হবে

২. শ্রেণির সংখ্যা নির্ধারণ: তথ্যের পরিমাণ দ্বারা শ্রেণির সংখ্যা নির্ধারিত হয়। তথ্যের পরিমাণ কম হলে শ্রেণির সংখ্যা কম হয় এবং তথাের পরিমাণ বেশি হলে শ্রেণির সংখ্যা বেশি হয়।

৩. শ্রেণিব্যাপ্তি নির্ধারণ :শ্রেণিব্যান্তির পরিমাণ নির্ভর করে তথ্যসারিতে বিদ্যমান শ্রেণির সংখ্যা এবং তথ্যের বিস্তারের ওপর। কোনাে তথ্যসারিতে তথ্যের বিস্তার কতটুকু তা প্রথমে জনতে ইবে।

৪. শ্রেণিসীমা নির্ধারণ: প্রদত্ত তথ্যসারির সবচেয়ে ছােট সংখ্যাকে প্রথম শ্রেণির নি্নসীমা এবং সবচেয়ে বড় সংখ্যাকে শেষ শ্রেণির উচ্চসীমা হিসেবে গণ্য করতে হবে এমন কোনাে নিয়ম নেই।

. শ্রেণির মধ্যবিস্দু নির্ণয় :প্রতিটি শ্রণির সর্বনিম্ন মান ও সর্বোচ্চ মান যোগফলকে দুই দ্বারা ভাগ করে শ্রেণির মধ্যবিন্দু নির্ণয় করা হয় এবং শ্রেণির মধ্যবিন্দুর কলামে সেগুলাে লিখতে হয়।

.্যালি চিহ্ন:শ্রেণিসীমা নির্ধারণের পর প্রত্যেক শ্রেণির অন্তর্গত তথ্যপুলাে বাছাই করা হয়। অতঃপর ঐসব তথ্য যে শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত সে শ্রেণির পা্শ্বে নির্দিষ্ট স্থানে লিখতে হয়। শ্রেণিবিভাগের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকটি তথ্য মানের জন্য এ পর্যায়ে ট্যালি চিহ্ন দেওয়া হয়।

 

**কেন্দ্রীয় প্রবণতার প্রয়ােজনীয়তা বা গুরত্ব : তথ্য বিশ্লেষণে কেন্দ্রীয় প্রবণতার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। নিন্মে কেন্দ্রীয় প্রবণতার গুরুত্বসমূহ আলােচনা করা হলাে ।

.তথ্যসারির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা প্রদান : কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপের সংখ্যামান নির্ণয় করা হয়। যার ফলে তথ্য সারির সকল তথ্যের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সহজে ধারণা লাভ করা যায়। যেমন- কোন গ্রামের সকল মানুষের আয় জানা সম্ভব হয় না, কিন্তু তাদের আয়ের গড় জানা থাকলে ঐ গ্রামের সকল মানুষের আয় সম্পর্কে পুরােপুরি একপ্রকার ধারণা লাভ করা যায়।

২. তুলনামূলক : কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপসমূহের মাধ্যমে এক বা একাধিক তথ্যাবলির মানের তুলনা করা সহজ হয়। কোনাে নির্দিষ্ট বিষয়ের তথ্যাবলি দ্বারা অন্যান্য সময়ের তথ্যাবলির তুলনামূলক আলােচনা করা যায়।

৩. সমগ্রক সম্পর্কে ধারণা লাভ : এর মাধ্যমে কোনাে সমগ্রক সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। সমগ্রকের নমুনা গড় নির্ণয় করে এর সমগ্রক সম্পর্কে মন্তব্য করা যায় কেন্দ্রীয় প্রবণতার মাধ্যমে। কারণ নমুনা সমগ্রকের প্রতিনিধিত্বশীল অংশ।

৪. তথ্যের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে সাহায্য : সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য গবেষণা কর্মে প্রাপ্ত তথ্য ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে কেন্দ্রীয় প্রবণতা সাহায্য সহযােগিতা করে থাকে।

৫. সম্পর্ক নির্ণয় : গবেষণা বিভিন্ন বিষয়ের সাথে নানাবিধ সম্পর্ক নির্ণয় করা দরকার হয়। বিশেষ করে পরিসংখ্যিক দিক থেকে তুলনামূলক সম্পর্ক নির্ণয় করা অত্যন্ত প্রয়ােজন। তাই এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রবণতার গুরুত্ব অপরিসীম

 


 

** ভবিষ্যদ্বাণীকরণ কী?

পূর্বানুমান:পরিসংখ্যান দ্বারা একটি চলক থেকে অন্য একটি চলক সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়।যেমন-কিছুসংখ্যক মানুষ়ের দুটি গুণাবলি পরিমাপের মধ্যে কতটুকু সম্পর্ক তা জানা। মনে করি, গ হলাে কলেজের পরাক্ষায় একজন ছাত্রের সাফল্যের পরিমাপ এবং ঘ হলাে বুদ্ধির পরিমাপ আমরা অতঃপর একজন নতুন ছাত্রের সন্ধান পলাম যার কেবল গ এর পরিমাপ আমাদের জানা এবং এই গ থেকে তার ঘ সম্পর্কে ধারণা করতে হবে। একটি চলের পরিমাপ থেকে অন্য চলক সম্পর্কে ধারণা করাই হলাে পূর্বানুমান।

**পৌনঃপুন্যের বণ্টন সারণি তৈরির ধাপ : নিম্নে পৌনঃপুন্যের বণ্টন সারণি বা টেবিল তৈরির ধাপগুলোে লিপিবদ্ধ করা হলাে :

১. পরিসর নির্ণয়

২. শ্রেণি সংখ্যা নির্ণয়;

৩. শ্রেণি ব্যবধান নির্ণয়;

৪. শ্রেণি ব্যবধানের উচ্চসীমা ও নিম্নসীমা নির্ধারণ;

৫. টালিচিহ্ন প্রদান এবং

৬. টালিচিহ্ন সংখ্যায় প্রকাশ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ধাপগুলার মধ্যে আমরা সারণি বা টেবিল সহজেই তৈরি করতে পারি।

**মনােবিজ্ঞানের পরিসংখ্যানের ব্যবহার বা প্রয়োজনীয়তা: মনােবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। নিম্নে সেগলাে আলােচনা করা হলাে।

, পরীক্ষণের পরিকল্পনা প্রণ়য়নে :পরীক্ষণ পরিকল্পনা এমনভাবে প্রণয়ন করা হয়, যাতে বিভিন্ন ধরনের দৈবঘটিত ভ্রান্তি হতে মুক্তি থাকা যায় এবং এর পরিমাপ নির্ণয় করা যায়। অর্থাৎ গবেষণা কর্মের ফলাফলের ক্রটিমুক্ত করতে ও ক্রটির পরিমাণ নির্ণয় করতে পরিসংখ্যান পন্ধতি ব্যবহার করা হয়।

, তথ্যের সংগ্রহ: তথ্য যেমন তেমনভাবে সংগ্রহ করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য মনোবিজ্ঞানের গবেষণার উদ্দেশ্যের সাথে যােগসামঞ্জস্য রেখে পরিসখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্যসংগ্রহ করা হয়।

, সংগ্রৃহীত তথ্যের বিশ্লেষণ : তথ্য হতে সহজে কোনাে সঠিক ধারণা গ্রহণ করতে বা তুলনামূলক কোনাে অবস্থার সমান উপলক্ধি পেতে হলে সংগ্রৃহীত তথ্যের সুবিন্যস্ত করা প্রয়ােজন। এজন্য গৃহীত অথ্যাদির বিন্যাস সাধন ও বিশ্লেষণের জন মনােবিযানে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

. তথ্যের উপস্থাপন : মনােবিজ্ঞানের গবেষণা বা পরীক্ষণলক্ধভাবে গ্রাপ্ত তথ্যসমূহকে পরিমাণগত দিক দিয়ে প্রকাশ করার জন্য পরিসখ্যান পদ্ধতি বাবহাত হয়।

৫. সামান্যধমী সিদ্ধান্ত প্রহণ : পরিসংখ্যানের সাহায্যে তথ্যগুলােকে সংক্ষিপ্ত ও সুবিধা করা হলে তা থেকে গবেষক সহজেই সামান্যাধর্মী সূত্র বা সিদ্ধান্ত গঠন করতে পারেন।

.ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে : প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে পাওয়া ফলাফল নতুন কিছু না পূর্ব অনুমিত এ বিষয়ে নিশ্টিত হওয়ার জন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

. সাধারণীকরণ : গবেষণার ফলাফলকে একই ধরনের অন্যানা গবেষণার ফলাফলের সাথে তুলনা করে গবেষক একটি সাধারণ মতে উপনীত হতে পারেন। আর এজন্য গবেষককে পরিসংখ্যান পদ্ধতি সাহায্য করে।

৮:সঠিকতা নিরূপনে: বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিজ্ঞান যেমন-রসায়নবিদ্যা, জীববিদ্যা, ভূ-ত্ত্ববিদ্যা, জ্যোতি্বিদ্যা ইত্যাদি বিষয়ে গবেষনার ফলাফলের সঠিকতা নিরূপণে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

৯. পরীক্ষণ পদ্ধতির বিকল্প হিসেবে : যেসব মানব আচরণের উপর পরীক্ষণ পদ্ধতি প্রয়ােগ করা সম্ভব হয় না, যেসব ক্ষেত্রে মানব আচরণ অনুধ্যান করার জন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়।

১০. পরিমাণগত ভাষায় প্রকাশ : গবেষণালব্ধ তথ্যসমূহকে পরিমাণগত ভাষায় প্রকাশ করার জন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতির প্রয়ােজন।

**রোশাক কালীর ছাপ অভীক্ষা কী?

রোশাক কালির ছাপ অভীক্ষা : প্রক্ষেপণমূলক অভীক্ষাসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অভীক্ষা হচ্ছে রােশাক অভীক্ষা। সুইজারল্যান্ডের মনােচিকিৎসক হারম্যান রােশাক ১৯২১ সালে এ অভীক্ষাটি তৈরি করেন। ১০টি কালির ছাপ বিশিষ্ট কার্ড নিয়ে এ অভীক্ষা গঠিত। এ অভীক্ষাটি রােশাক কালির ছাপ অভীক্ষা নামেও পরিচিত।

রোশাক অভীক্ষার ১০টি কালির ছাপের মধ্যে ৫টি কালাে ও ধূসর বর্ণের, ২টি কালাে ও লাল বর্ণের এবং বাকি ৩টি অন্যান্য বর্ণের। কার্ডগুলাে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত। কার্ডগুলাের কালির ছাপ প্রকৃতপক্ষে অর্থহীন, কিন্তু এমন প্রকৃতির যে সেগুলােকে যেমন খুশি তেমন করে প্রত্যক্ষণ করা যায়

**মনােবিজ্ঞানে পরিসংখ্যানের ব্যবহার/প্রয়ােগ : বর্তমানে যেকোনাে প্রকারে সংখ্যাধ্ক বিষয়ক কাজে পরিসংখ্যানে ব্যবহার করা হচ্ছে। আধুনিক মনােবিজ্ঞানে যেসব ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান পদ্ধতি বাযবহার করা হচ্ছে সেগুলাে নিদ্নে আলােচনা করা হলাে

১. মানব আচরণ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ :মনােবিজ্ঞান সবসময় ব্যত্তি ও তার সমস্যাবলি নিয়ে কাজ করে বিধায় এ সম্পর্কিত নানাবিধ তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। তবে সঠিক ও নির্ভরযােগ্য তথ্য সগ্রহ করা হলে ফলাফল তুটিমুক্ত হয়ে থাকে।

, পরীক্ষণ পরিকল্পনা প্রণয়ন :পরীক্ষণ পরিকল্পনা এমনভাবে প্রণয়ন করতে হয়ে যাতে করে দৈবজনিত কোন ভুল না হয় কেননা পরীক্ষণে যাতে কোন ভ্রান্তি না হয় তার জন্য পরীক্ষণ পরিকল্পনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হয়। তথাপি দেশের মানব সম্পদ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, জনশক্তি বন্টন প্রভৃতি তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে পরিকল্পনা প্রণয়নে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

.ভবিষ্যদ্বানীকরণ: পরিসংখ্যানের বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যক্তির বর্তমান আচরণ সমন্ধে পর্যবেক্ষণ বা পর্যালােচনার নিরিখে ভবিষ্যত আচরণ সম্পর্কে একটা ধারণা প্রদান করে।

8. সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ :  নিত্যদিনের ব্যবহারযােগ্য বিভিন্ন দ্রব্যের উৎপাদন, চাহিদা, যােগান, বিনিয়ােগ আমদানি-রপ্তানি, ক্রয়-বিক্রয়, প্রভৃতির সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণের কাজে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এমনকি কৃষি কাজে ও পরিসংখ্যান পদ্ধতির ব্যবহার লক্ষ করা যায়।

৫. সাধারণীকরণ : কোনাে একটি গবেষণার ফলাফল যখন অন্য একটি গবেষণার ফলাফলের সাথে তুলনা করার জন্য গবেষক সিদ্ধান্তে উপনীত হয় তখন গবেষণার ফলাফল বাস্তবক্ষেত্রে ব্যবহারযােগ্য ও নির্ভরযােগ্য হতে হয়। তাই এক্ষেত্রে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

৬. জন্মহার ও মৃত্যুহার নির্ণয় : দেশে প্রতিবছর কি হারে জনসংখ্যা জন্মগ্রহণ করছে আবার কি হারে মৃত্যুবরণ করছে তার সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। এরূপ ধারণা মনােবিজ্ঞানেও ব্যবহৃত হয়। তাই দেশের সঠিক জন্মহার ও মৃত্যুহার নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্রায় ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়

৭. জনসংখ্যাধিক্য নির্ণয়: জনসংখ্যা সঠিক অবস্থান নির্ণয় করার জন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কেননা বিশাল জনগােষ্ঠির গণনা পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার ছাড়া সম্ভব নয়। তাই জনসংখ্যাধিক্য নির্ণয় করার জন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতির ব্যবহার অত্যাধিক গরতপূর্ণ

৮. হিসাব-নিকাশ : কর্মসংস্থান, উৎপাদন, আয়-ব্যয়, আমদানি-রপ্তানি, ব্রুয়-বিক্রয় প্রভৃতি জাতীয় সম্পদসমূহ হিসাব নিকাশের জন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া অর্থনৈতিক ও মুদ্রা বাজারে চাহিদা বিশ্লেষণ কালীন সূচক ও সারণি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

.ফলাফল প্রকাশ : মনােবৈজ্ঞানিক গবেষণায় থেকে প্রাপ্ত ফলাফলকে সংক্ষিপ্ত স্বর্থ্যহীন ও সহজ ভাষায় প্রকাশ করার অন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য যদ ছাড়ানাে ছিটানাে থাকে সেগুলাে সুবিনাম্ত আকারে গঠন করার জন্য পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

১০.যাচাই বাছাইকরণ : উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলাের বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ,মূল্যায়ন ও সঠিক পরিকল্পনা যাচাইয়র কাজে পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।


 

**বিস্তারমানের সংজ্ঞা দাও।

বিস্তারমান : বিচ্যুতির বর্গের গড়কে বিস্তারমান বা ভেদাঙ্ক বলে। আবার আদর্শ বিচ্যুতির বর্গকেও ভেদাঙ্ক বলা হয়। যেমন : আদর্শ বিচ্যুতি যদি ৪ হয়, তাহলে ভেদাঙ্ক হবে =৪x৪=১৬

পরিশেষে বলা যায় যে, কেন্দ্র থেকে সাফল্যান্কসমূহের বিচ্যুতির বর্গের গড়কেই বিস্তারমান বা ভেদাঙ্ক বলে।

Gleitngh এর মতে,বিস্তারমান হলে পৌনঃপুন্যের বণ্টনে বিষম রাশিসমূহের একটি পরিমাপ । এটি কেন্দ্র থেকে সাফল্যান্কসমূহের পার্থক্যের ফলাফল থেকে হিসারকৃত, বর্গের ফল, প্রতিটি ক্ষেত্রে ভাগ করে পাওয়া সকল বিচ্যুতির বর্গের যােগফল।

 

**গণসংখ্যা নিবেশন : ব্যাপক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে সংগৃহীত উপাত্তের সংখ্যা এত বেশি হয় যে, এদেরকে স্বতন্ত্রভাবে প্রকাশ করা যায় না। ফলে উপাত্তসমূহকে শ্রেণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে সীমায়িত করার প্রয়ােজন হয়। এরপ পরিস্থিতিতে তথ্যমানগুলােকে কতকগুলাে সংখ্যাগত শ্রেণির অধীনে বিভক্ত করা হয়। শ্রেণিবিভক্ত তথ্যমানগুলােকে যখন একটি টেবিলে এমনভাবে সাজানাে হয়, যে টেবিলে বিভিন্ন শ্রেণি এবং তার বিপরীতে তথ্যমানের সংখ্যা বা গণসংখ্যা পাশাপাশি অবস্থান করে তখন তাকে বলা হয় গণসংখ্যা টেবিল বা গণসংখ্যা নিবেশন। অন্যভাবে বলা যায়, গণসংখ্যা নিবেশন হলাে এমন এক ধরনের নিবেশন যেখানে বিভিন্ন শ্রেণির বিপরীতে কোনাে চলকের মানের সংখ্যা বা গণসংখ্যার প্রকাশ করা হয়। গণসংখ্যা নিবেশন থেকে একটি বৃহৎ আকারের উপাত্তসমূহের সারাংশ সহজে বুঝা যায়।

**গণসংখ্যা নিবেশনের তাৎপর্য বা গুরুত্ব বর্ণনা কর।

গণসংখ্যা নিবেশনের গুরুত্ব: গণসংখ্যা নিবেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি। তথ্য সংক্ষিপ্তকরণের এটি একটি আবশ্যকীয় উপায়। প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিশ্লেষণের উপযােগী করে তথ্য উপস্থাপনে গণসংখ্যা নিবেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে গণসংখ্যা নিবেশনের গুরুত্ব বর্ণনা করা হলাে :

১ সংখ্যাতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা : গণসংখ্যা নিবেশন উপাত্তের একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকে। গণসংখ্যা নিবেশনের সাহায্য কোনাে একটি বিশেষ শ্রেণি বা বিভাগে চলকের মানের সংখ্যা কতটা জানা যায়।

২.ঝোঁকপ্রবণতা অনুধাবন : গণসংখ্যা নিবেশনের মাধ্যমে তথ্যের কোকপ্রবণতা অনুধাবন করা যায়। ফলে কেন্দ্রীয় মানের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

, কেন্দ্রীয় মানের অবস্থান জানা : একটি বিশাল তথ্াসারিকে যখন শ্রেণিবদ্ধ করা হয় তখন তথ্যাসারির কেন্দ্রীয় মানের অবস্থান সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়।

৪. বঙ্কিমতা ও সুচালতা সম্পর্কে ধারণা লাভ : বঙ্কিমতা ও সুচালতা সম্পর্কে ধারণা লাভের জন্য গণসংখ্যা রেখা তৈরি করা প্রয়ােজন। গণসংখ্যা রেখা গণসংখ্যা নিবেশনের ওপর নির্ভরশীল।

৫.লেখচিত্রে উপস্থাপন:লেখ উপস্থাপনের জন্য প্রয়ােজন গণসংখ্যা নিবেশন।কেননা শ্রেণিবস্থ তথ্য ছাড়া কোনাে লেখ উপস্থাপন করা সমন্ভব নয়।

৬.তথ্যসারির মধ্য মান জানা: গণসংখ্যা নিবেশন থেকে উপাত্তগুলাের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মান নির্ণয় করা হয় ও তথ্যসারির মধ্য মানের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

৭.শ্রেণিভিত্তিক উপস্থাপন: গণসংখ্যা নিবেশনের শ্রেণিগুলাের গণসংখ্যার মান দেখে তথ্যের ঝোঁকপ্রবণতা অর্থাৎ গতিপ্রকৃতি কোন দিকে তা সহজেই বুঝা যায়।

.তথ্যের যথাযথওসামঞ্জস্যপূর্ণ উপস্থােপন:তথ্যের সাধারণ বৈশিষ্ট্য উপলবব্ধি,তথাের সুশৃঙ্খল বিন্যাস, তুলনাকরণ ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে গণসংখ্যা নিবেশনের ব্যবহার অপরিহার্য। শুধুমাত্র তথ্যমালা গনসংখ্যা নিবেশনের আকারে সাজানোর পরই বিভিন্ন ধরনের লেখ অঙ্কন করা সম্ভব

 

** গড়ের সংজ্ঞা দাও।

গড় : একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন তথ্যসারির মানসমূহের যোগফলকে মােট তথ্য সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে যে ভাগফল পাওয়া যায় তাকে গড় বা যােজিত গড় বা গাণিতিক গড় বলে।

কোনো বণ্টনের তথ্যসারি বা উপাত্তসমূহের সমষ্টিকে ঐ তথ্যসারি বা উপাত্তসমূহের সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে যে ফলাফল পাওয়া যায় তাকে গড় বা যোজিত গড় বা গাণিতিক গড় বলে।

ডেভিড জি. মায়ার্স বলেন, "গড় হলাে কোনাে বণ্টনের গাণিতিক গড় সাফল্যাঙ্কসমূহের যােগফল এবং তাদের সংখ্যা দ্বারা ভাগ থেকে প্রাপ্ত হয়।"

৬. সামগ্রিকভাবে লেনদেনের ক্ষেত্রে : সমাজের পারস্পরিক লেনদেনের ক্ষেত্রে এর প্রয়ােজন দেখা যায়। বিশেষকরে ব্যবসাবাণিজ্য, ক্রয়-বিক্রয়, আয়-ব্যয়ের হিসাব নিকাশ করতে কেন্দ্রীয় প্রবণতার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি

**গণসংখ্যা সারণি কাকে বলে? গণসংখ্যা সারণিক শ্রেণিবিভাগ ও প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।

গণসংখ্যা সারণি: উপাত্তসমূহকে সংক্ষিপ্তাকারে সারণিতে বিন্যস্ত করা হয়। উপাত্তকে

সারণিতে বিন্যস্ত করার ক্ষেত্রে কতকগুলাে নিয়ম অনুসরণ করা হয়। যে সারণিতে উপাত্তসমূকে শ্রেণি, কলাম, সারিতে সুবিন্যস্ত আকারে সাজানাে হয় তাকে গণসংখ্যা সারণি বলে। গণসংখ্যা সারণিতে উপাত্তসমূহকে নির্দিষ্ট একক ব্যবহার করে প্রয়ােজনীয় সকল বর্ণনা ও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। সুষ্ঠুভাবে গণসংখ্যা সারণি তৈরি করলে গবেষণার কাজ সহজ হয়।

গণসংখ্যা সারণির প্রকার ভেদ:তথ্য বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন উভয় রাশির থাকতে পারে। এদিক দিয়ে বিবেচনায় গণসংখ্যা সারণি দুই ধরনের হয়। যথা:

ক. বিচ্ছিন্ন গণসংখ্যা সারণি: পরস্পর বিচ্ছিন্ন একককে যখন গণসংখ্যা সারণিতে বিন্যসপ্ত করা হয় তাকে বিচিছন্ন গণসংখ্যা সারণি বলে।

. অবিচ্ছিন্ন গণসংখ্যা সারণী:তথ্যের একককে বিশেষ শ্রেনী ব্যাক্তি দিয়ে বিন্যাস করে উপস্থাপন করা যায়। শ্রেণি ব্যাপ্তি সমন্বিত কয়েকটি শ্রেণি যখন সারণিতে উপস্থাপন কর

তখন তাকে অবিচ্ছিন্ন গণসংখ্যা সারণি বলে।

গণসংখ্যা সারণি প্রস্তুতকরণ : গণসংখ্যা সারণি তৈরির সময় কয়েকটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয় নিচে এগুলাের আলােচনা করা হলাে

১. যখাযখ শিরােনাম ব্যবহার:গণসংখ্যা সারণি প্রস্তুতের সময় একটি শিরােনাম ব্যবহার করা হয়। শিরােনামটি সারণির বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা হয়।

২.উপশিরোনামও ব্যাখ্যাকারী টীকা:প্রয়াজনমতাে উপশিরােনামওব্যাখ্যাকারী টাকা ব্যবহার করা হয়।

৩. পাদটীকা ও উৎস : পাদটীকায় প্রয়ােজনীয় ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ থাকে। উপাত্ত সংগ্রহের সময় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করা হয়।

৪.সারণি নম্বর ব্যবহার: একাধিক সারণি একত্রে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সারণিসমূহে নম্বর প্রয়ােগ করা হয়।

৫.শ্রেণিসংখ্যা নির্ধারণ: সারণির আকার যেন খুব বড় বা ছােট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়।  আবার গবেষণার কাজে কোন সমস্যা সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে এ শ্রেণি সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়।

৬. শ্রেণি ব্যাক্তি নির্ধারণ: শ্রেণি ব্যাপ্তি এমনভাবে নির্ধারণ করতে হয় যেন শ্রেণি সংখ্যা খুব বেশি বা কম না হয়। আবার গবেষণার সুবিধার্থে নির্দিষ্ট শ্রেণি ব্যাপ্তি ব্যবহার করা হয়।

৭. শ্রেণি পরিসীমা নির্ধারণ : শ্রেণিতে ব্যবহৃত উপাত্তকে আবার বিভিন্ন পরিসীমা অনুযায়ী সাজানাে হয়। কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে উপাত্তকে অন্তর্ভুক্ত পদ্ধতিতে, আবার কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে বহির্ভূত পদ্ধতিতে সাজানাে হয়।

**মাধ্যমিক তথ্য-উপাত্তের উৎসসমূহ : মাধ্যমিক তথ্য-উপাত্তের উৎসগুলােকে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন- ১. প্রকাশিত উৎস ও ২, অপ্রকাশিত উৎস। নিম্নে মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের এসব উৎস সম্পর্কে আলােচনা করা হলাে :

১. প্রকাশিত উৎস : বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলাে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে তা সাজিয়ে, গুছিয়ে, সুবিন্যস্ত আকারে এবং ক্রম অনুসারে একটি পুস্তক আকারে প্রকাশ করে। এ পুস্তককে বলা হয় প্রকাশনা। সরকারি, আধাসরকারি, বেসরকারি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, পত্র-পত্রিকা প্রভৃতি হলাে প্রকাশিত উৎস। নিম্নে প্রকাশিত অন্যান্য উৎষের নাম ও তাদের প্রকাশনার উৎস সম্পর্কে আলােচনা করা হলাে :

ক. সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান : প্রতিবছরই বাংলাদেশের সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলাে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেযেমন- পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ, স্থানীয় সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরাে প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য।

, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান :  বিভিন্ন বেসরকারি এজিও ব্যাংক তাদের প্রয়ােজনে বিভিন্ন গবেষণা করে তথ্য সংগ্রহ করে যা তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমিক উৎস হিসেবে পরিচিত।

, গবেষণা প্রতিষ্ঠান : পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বড় বড় অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করে থাকে এবং তথ্য সংগ্রহ করে। এমনকি আমাদের দেশেও অনেক প্রতিষ্ঠান গবেষণার সাথে ওতপ্রােতভাবে সংশিষ্ট

, কমিশন : দেশে বিভিন্ন কমিশন রয়েছেযেমন নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, পে কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরি কমিশন প্রভৃতি কমিশন প্রতিবছর একটি বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যা মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের অন্যতম উৎস।।

, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান : বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যেমন- বসুন্ধরা গ্রুপ, সামিট গ্রুপ প্রভৃতি প্রতিবছরই একটি সামযিকী যা জার্নাল প্রকাশ করে।

, পত্রপত্রিকাসমূহ : পত্রপত্রিকাগুলাে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে ক্লোড়পত্র প্রকাশ করে থাকে। তাই পত্রপত্রিকাসমূহ মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের অন্যতম উৎস হিসেবে পরিচিত।  প্রভৃতি পত্রপত্রিকা হলাে মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের উৎস।

.ব্যক্তিগত গবেষণা : বিশেষ করে অনেক গবেষকই ব্যক্তিগতভাবে গবেষণা করে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে যা মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের অন্যতম উৎস।

জ. আন্তর্জাতিক সংস্থা : আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থখা যেমন- UNO, IMF, IDA, ILO, WIT0, UNESCO, IBRD, UNICEF প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলাে প্রতিবছরই বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বার্ষিক রিপাের্ট ও প্রতিবেদন প্রকাশ করে

২. অপ্রকাশিত উৎস : যেসব তথ্যসমূহ হড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে তা হলাে অপ্রকাশিত উৎস।উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিসের সংরক্ষিত তথ্যাবলি ও রেকর্ডসমূহের কথা বলা যায়। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অনেক সময় তাদের নিজস্ব প্রয়ােজনে গবেষণা করে থাকে। আর গবেষণালব্ তথ্যসমূহ তারা রেকর্ড আকারে লিপিবন্থ করে। যা পরবর্তীতে কেউ ফোন করে এসব তথ্যসমূহ জানতে পারে। এসব তথ্য হলাে অপ্রকাশিত তথাের উৎস। তবে প্রতিষ্ঠান কখনও এসব তথ্যসমূহ প্রকাশ করে না তাদের নিজস্ব রেকর্ড বা ফাইলে লিপিবন্ধ করে রাখে।

**প্রচুরক কী? প্রচুরকের সুবিধা, অসুবিধা ও ব্যবহার উল্লেখ কর।

প্রচুরক বা কেন্দ্রিক বা সংখ্যাগুরু মান : কোনাে নিবেশনের তথ্য সারিতে যে মানটি সবচেয়ে বেশিবার থাকে তাকে প্রচুরক বলে। যেমন। ৩, , , , , , ৪ সংখ্যাগুলাের মধ্যে ৪ দুবার বা সবচেয়ে বেশি বার রয়েছে তাই ৪ই প্রচুরক পরিসংখ্যানবিদ সিপসন এবং কাফকা এর মতে, একটি তথ্যসারিতে যে সাধারণ মানটি পুনঃপুন সংঘটিত হয় তাই হলো প্রচুরক। বন্টনের সবচেয়ে আধিক পৌন:পুন্য অবস্থান করে পরিমাপ স্কেলের এমন বিন্দুকেই প্রচুরক বলে সংঙ্গায়িত করা হয়।

**প্রচুরকের সুবিধা : কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপগুলোর মধ্যে প্রচুরক খুব সহজ বিধায় এর কিছু সুবিধা রয়েছে তা নিম্নে আলােচনা করা হলো :

১. প্রচুরক নির্ণয় করা খুবই সহজ। চাক্ষুস নিরীক্ষণ দ্বারাও এটি নির্ণয় করা যায়।

২. প্রচুরক নির্ণয়ের পদ্ধতি খুব সহজ।

৩. চরম ও প্রান্তিক মান দ্বারা প্রচুরক কম প্রভাবিত হয়।

৪. প্রান্ত খোলা শ্রেণিবিশিষ্ট বণ্টন হতেও প্রচুরক নির্ণয় করা যায়।।

৫. সাধারণ মানগুলাে জানা থাকলেও প্রচুরক নির্ণয় করা যায়।

৬. গুণবাচক তথ্যের ক্ষেত্রেও প্রচুরক ব্যবহার করা যায়।

৭. লেখচিত্রের মাধ্যমেও প্রচুরক নির্ণয় করা যায়।

৮. সাফল্যাঙ্কগুলেঅ না সাজিয়েও প্রচুরক নির্ণয় করা যায়।

৯. গড় ও মধ্যমা জানা থাকলে সহজেই প্রচুরক নির্ণয় করা যায়।

১০. প্রচুরক তথ্যসারির সর্বক্ষেত্রে নির্ভরযােগ্য এবং লেখচিত্রে দেখানো যায় তাই ইহা পর্যবেক্ষণযােগ্য

*প্রচুরকের অসুবিধা : প্রচুরকের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও বিদ্যমান, যা সীমাবদ্ধতা হিসাবে গণ্য করা হয়। নিম্নে এর অসুবিধাসমূহ উপস্থাপন করা হলাে :

১. প্রচুরক তথ্যসারির সকল মানের উপর নির্ভর করে না।

২. কোনাে সাফল্যাঙ্ক একাধিক বার ব্যবহার না হলে প্রচুরক নির্ণয় করা যায় না।

৩. কোনাে বণ্টনে একাধিক প্রচুরক থাকলে সঠিকভাবে প্রচুরক নির্ণয় করা যায় না।

৪. গাণিতিক বা বীজগাণিতিক প্রক্রিয়ায় প্রচুরককে আরােপ করা যায় না।

৫. বন্টনের সবগুলাে সাফল্যাঙ্ককে গুরুত্ব দিয়ে প্রচুরক নির্ণয় করা যায় না।

 

*প্রচুরকের ব্যবহার : প্রচুরক কেন্দ্রীয় প্রবণতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপক বা মধ্যকমান। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার লক্ষ করা যায়। যেমন:

১. সামাজিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় প্রচুরককে ব্যবহার করা হয়।

২. লেখচিত্রের মাধ্যমে সহজবােধ্যভাবে প্রচুরককে উপস্থাপন করা হয়।

. নামভিত্তিক উপাত্তের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

. মুক্ত শ্রেণিযুক্ত উপাত্তের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপক হিসেবে প্রচুরক ব্যবহার করা হয়।

. গুণবাচক উপাত্তের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

৬. বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে প্রচুরক ব্যবহার করা হয়।

.অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে যেমন-মজুরি, যােগান, আয় চাহিদা ইত্যাদি বিশ্লেষণে এটি ব্যবহার করা হয়।

**পরিসর কী?

পরিসর : পরিসর হলাে বিচ্যুতি পরিমাপের সহজ পদ্ধতি। কোনাে বণ্টনের বৃহত্তম সংখ্যা ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যার ব্যবধান বা পার্থক্যকে উক্ত বন্টনের পরিসর বলা হয়।

ম্যাকমহোন বলেন,"বিচ্যুতির সহজতম পরিমাপ হলাে পরিসর, যা একগুচ্ছ সাফল্যানঙ্কের বৃহত্তম এবং ক্ষুদ্রতম সাফল্যাঙ্কের পার্থক্যকে বােঝায়।"

ডি. জি. মায়ার্স এর মতে, "পরিসর হলাে একটি কণ্টনের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে ছােট সাফল্যানঙ্কের মধ্যে পার্থক্য।

 

 

**চতুর্থাংশীয় বিচ্যুতি কী?

চতুর্থাংশীয় বিচ্যুতি : অনপেক্ষ বা পরম বিস্তার পরিমাপের একটি শুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হলাে চতুর্থাংশীয় বিচ্যুতি। কোনাে নিবেশনে তিনটি চতুর্থক থাকে যা নিবেশনকে সমান চার ভাগে বিভক্ত করে। প্রথম চতুর্থক হলাে এমন একটি সংখ্যা যার নিচে নিবেশনের ২৫% সংখ্যা অবস্থান করে। দ্বিতীয় চতুর্থক হলাে মধ্যমা যা নিবেশনকে দুভাগে বিভক্ত করে এবং তৃতীয় চতুর্থক হলাে, এমন একটি সংখ্যা যার নিচে নিবেশনের ৭৫% সংখ্যা অবস্থিত।

সহজভাবে বলা যায়, চতুর্থক ব্যবধান বা চতুর্থাংশীয় বিচ্যুতি হলাে প্রথম এবং তৃতীয় চতুর্থকের ব্যবধানদ্বয়ের গড়।। অর্থাৎ তৃতীয় চতুর্থক এবং প্রথম চতুর্থকের বিয়ােগফলকে ২ দ্বারা ভাগ করলে যে ভাগফল পাওয়া যায় তাকে চতুর্থাংশীয় বিচ্যুতি বলে।

 

**চতুর্থক ব্যবধান কাকে বলে? চতুর্থক ব্যবধানের সুবিধা ও অসুবিধা তুলে ধর।

চতুর্থক ব্যবধান : কোনাে তথ্য নিবেশনের তথ্যমানগুলােকে মানের ক্রমানুসারে সাজিয়ে সমান চার ভাগে ভাগ করলে তিনটি চতুর্থক পাওয়া যায়। যথা : প্রথম চতুর্থক, দ্বিতীয় চতুর্থক এবং তৃতীয় চতুর্থক। যে চতুর্থক মান তথ্যসারির ক্ষুদ্রতম মানসমূহের দিকে অবস্থান করে, উহাকে প্রথম চতুর্থক বলে। তৃতীয় চতুর্থক থেকে প্রথম চতুর্থকের বিয়ােগফলকে 2 দারা ভাগ করলে যে সংখ্যামান পাওয়া যায় তাকে বলা হয় চতুর্থক ব্যবধান।চতুর্থক ব্যবধানকে অনেক সময় অর্ধ আন্তঃচতুর্থক পরিসর ও বলা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় চতুর্থকটি তথাসারির ঠিক মাঝখানে অবস্থান করায় এটি মধ্যমার সমান হবে।

 

*চতুর্থক ব্যবধানের সুবিধা : নিম্নে চতুর্থক ব্যবধানের সুবিধাগুলাে উল্লেখ করা হলাে :

.চতুর্থক ব্যবধান সহজবােধ্য এবং সহজে নির্ণয় করা যায়। যেসব তথ্য উপস্থাপন করা হয় সারিবদ্ধ কিন্তু বিষ্তৃতির পরিমাপ করা হয় সংখ্যার ভিত্তিতে সেসব তথ্যের ব্যবহার করা হয়।

.বিস্তৃতির পরিমাপক হিসেবে চতুর্থক ব্যবধান পরিসর অপেক্ষা ভালাে। অনিয়মিত সংখ্যাগুলাে চতুর্থক ব্যবধানকে প্রভাবিত করতে পারে না। এ অর্থে এটি পরিসরের চাইতে উৎকৃণ্ট পরিমাপ ।

.বিস্তার পরিমাপে চতুর্থক ব্যবধান সহজবােধ্য ও সুস্পষ্ট সংজ্ঞায়িত।

.খোলা শ্রেণিব্যাপ্তি সংবলিত গণসংখ্যা নিবেশনের বিস্তার পরিমাপের জন্য চতুর্থক ব্যবধান খুবই উপযােগী।

.তথ্যের চরম মানের উপস্থিতি দারা এটি প্রভাবিত হয় না।

.উচ্চ প্রতি বৈষম্যপূর্ণ তথ্যের বিস্তার পরিমাপেও এর ব্যবহার যথার্থ।

*চতুর্থক ব্যবধানের অসুবিধা : নিম্নে চতুর্থক ব্যবধানের অসুবিধাগুলাে উল্লেখ করা হলাে :

.চতুর্থক ব্যবধান নির্ণয়ে বীজগাণিতিক নিয়ম প্রয়ােগ সম্ভব নয়।

. এটি নমুনা বিচ্যুতি দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়।

. চতুর্থক ব্যবধান নির্ণয়ে তথ্যের সবগুলাে পর্যবেক্ষণ বিবেচনা করা হয় না।

. এটি তথ্যসারির সমস্ত সংখ্যামানকে আওতাভুক্ত করে না।

. যেহেতু প্রথম ও তৃতীয় চতুর্থকের সাহায্যে এ মান নির্ধারণ করা হয়, তাই তথ্যের প্রথম 25% ও শেষ 25% মােট 50% তথ্য বিবেচনায় আসে না।

.সর্বোপরি চতুর্থক ব্যবধানকে বিস্তৃতির উত্তম পরিমাপক বলা যায় না। কারণ এটি তথ্যের গড় মান হতে তথ্যসমূহের বিস্তৃতি পরিমাপ করে না; বরং কেন্দ্রীয়/গড় মান হতে তথ্য মানসমূহের রৈখিক দূরত্ব প্রকাশ করে।

**বিস্তার পরিমাপ কাকে বলে? বিস্তার পরিমাপের প্রয়ােজনীয়তা বর্ণনা কর।বিস্তার পরিমাপ : কোনাে তথ্যসারির বা গণসংখ্যা নিবেশনের কেন্দ্রীয় মান হতে অন্যান্য মানগুলাের ব্যবধান বা বিস্তৃত যে সংখ্যাত্মক মানের সাহায্যে পরিমাপ করা হয় তাকে বিস্তার পরিমাপ বলে। বিস্তার পরিমাপ হলাে বিস্তারের সংখ্যাত্মক পরিমাপ । বিস্তার পরিমাপের সাহায্যে তথ্যসারির কেন্দ্রীয় মান হতে অন্যান্য মানগুলাের ব্যবধানের গড় নির্ণয় করা হয়।

                পরিসংখ্যানবিদ হেইল কোহলার এর মতে, "বিস্তার পরিমাপসমূহ বা বিভিন্নতা নিবেশনের মানসমূহের বিক্ষিপ্ত অবস্থান নির্দেশ করে। একটি উপাত্ত বা তথ্য থেকে কেন্দ্রীয় মান ও অন্যান্য মানগুলাে কতটুকু দূরে অবস্থান করে তা নির্দেশ করে থাকে।"

*বিস্তার পরিমাপের প্রয়ােজনীয়তা : কোনাে তথ্যসারির বা নিবেশনের মধ্যক মান জানা থাকলেও কেন্দ্রীয় মান থেকে সংখ্যাগুলাে কতটা নিকটে বা দুরে অবস্থান করে সেই সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়ােজন। আর এ কারনেই বিস্তার পরিমাপ সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়ােজন। নিম্নে বিস্তার পরিমাপের প্রয়ােজনীয়তা বা গুরুত্ব উল্লেখ করা হলাে :

.দুটি তথ্যসারির সামগঞ্জস্য তুলনা করার জন্য বিস্তার পরিমাপ ব্যবহার করা হয়। বিস্তার পরিমাপের সাহায্যে বিভিন্ন উপাত্তের তুলনামূলক চিত্র পরিমাপ করা সম্ভব হয়।

.বিস্তার পরিমাপের সাহায্যে কোনাে তথ্যসারির কেন্দ্রীয় মান হতে অন্যান্য মানগুলাের সামঞ্জস্যতা পরিমাপ করা সম্ভব হয়

৩.বিস্তার পরিমাপের সাহায্যে কোনো তথ্যসারির মানগুলাের মধ্যকার ভেদ পরিমাপ করা সম্ভব হয়।

৪.বিস্তার পরিমাপ তথ্যসারির মধ্যক বা কেন্দ্রীয় মানের যথার্থতা যাচাই করে। যে তথ্যসারির বিস্তার যতোটা কম তার মধ্যক মানগুলাে ততো বেশি প্রতিনিধিত্বকারী হয়।

৫.কোনাে কারখানার উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান যাচাইয়ে বিস্তার পরিমাপ ব্যবহৃত হয়।

৬.সংশ্লেষ, নির্ভরণ, নমুনায়ন, কল্পনার যথার্থতা যাচাই ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিস্তার পরিমাপ ব্যবহৃত হয়।

৭.সম্পদের বন্টনের অসমতা পরিমাপে বিস্তার পরিমাপ ব্যবহৃত হয়।

 

**সংখ্যার সংজ্ঞা দাও। সংখ্যার বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর।

সংখ্যা : গণিতবিদ বাট্রান্ড রাসেল বলেন, "সংখ্যা হলাে সকল শ্রেণির শ্রেণি।" অর্থাৎ শুধু সংখ্যার সামগ্জস্যের ভিত্তিতে বস্তুসমূহকে শ্রেণিবদ্ধ করা যায়। যেমন- দুটি গরু, দুটি মহিষ, দুটি পাখি এগুলাে একই শ্রেণিভুক্ত হতে পারে। এভাবে দুটি, তিনটি বা চারটি শ্রেণি হতে পারে। বিয়ােজন প্রক্রিয়া প্রয়ােগের বেলায় এ পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কেননা ছােট সংখ্যা থেকে বড় সংখ্যার বিয়ােগ হয় না। তাই পূর্ণ সংখ্যাপদ্ধতি সম্প্রসারিত হয় এবং ধনাত্মক ও শূন্য সংখ্যার ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। এভাবে ধীরে ধীরে ভগ্নাংশ সংখ্যা ও দশমিক পদ্ধতির আবিষ্কার হয়।

*সংখ্যার বৈশিষ্ট্য : নিম্নে সংখ্যার বৈশিষ্ট্য আলােচনা করা হলাে :

১. অভেদ : গণিতে যেসব সংখ্যা বা চিহ্ন ব্যবহৃত হয় সেগুলাের প্রতিটি একেকটি আলাদা সংখ্যা। অর্থাৎ a হলে a কিন্তু a কখনাে b হবে না

২. ক্রম পর্যায় : অপরিবর্তনীয়ভাবে একটি রৈখিক মাপকে সংখ্যাগুলােকে স্থাপন করা যায়। যেমন-৫,১০,১৫,২০ সংখ্যাগুলােকে ক্রমপর্যায়ে সাজানাে হয়।

৩. যৌক্তিকতা : যৌক্তিকতার অর্থ হলাে সংখ্যাসমূহকে যােগ করা হলে পারস্পরিক সামঞ্জস্যপূর্ণ ফল লাভ করা যায়। যেমন- a+b=c অথবা, ৩+৫=৮।

 

**উপাত্তের কী কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে?

উপাত্তের বৈশিষ্ট্য: নিম্নে উপাত্তের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করা হলাে ।

১. উপাত্তসমূহ অবশ্যই সংখ্যায় প্রকাশিত হতে হবে।

২. উপাত্তসমূহ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত হতে হবে।

৩. প্রতিক্রিয়া লিপিবদ্ধকরণের প্রক্রিয়া থাকতে হবে।

৪. উপাত্ত বিশ্ব সম্পর্কে তথ্য বা পর্যবেক্ষণযােগ্য হতে হবে।

৫. কোনাে বিষয়ের অভিব্যক্তি থাকতে হবে।

৬. সুপ্ত পর্যবেক্ষণযােগ্য হতে হবে।

৭. তথ্যসমূহ সবসময় স্বীকৃত হতে হবে।

, তথ্যসমূহ পরিমাপযােগ্য হতে হবে।

৯. উপাত্ত বা তথ্যসমূহ বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে সংগৃহীত হতে হবে

 

**পরিমাপনের বিভাজন লিখ।

*স্টিভেল এর পরিমাপনের পর্যায়সমূহের সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

প্রাকৃতিক জগতের ঘটনাবলি সংখ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ঘটে থাকে। তাই প্রাকৃতিক ঘটনাবলির পরিমাপের প্রয়ােজন হয়ে পড়ে। খুব সাধারণভাবে পরিমাপন বলতে বুঝায় কোানাে বস্তু বা ঘটনাকে সংখ্যায় প্রকাশ করা।

পরিমাপনের পর্যায় : নিচে পরিমাপনের পর্যায়গুলাে আলােচনা করা হলাে :

১. নামডিত্তিক মাপক : এ পর্যায়ে কোনাে বস্তু বিষয় বা অবস্থার নাম লেভেলের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণ করা হয়।

যেমন- স্কুলে প্রথম হতে দশম শ্রেণি সংখ্যা প্রদানের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়।

২. ক্রমবোধক মাপক : এ পর্যায়ে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে তুলনা করে উপস্থাপন করা যায়। যেমন- বড়,

মাঝারি, ছােট।

৩. সমব্যবধান মাপক : শ্রেণি বিভক্তকারী এবং দূরত্বের মাত্রা নির্দেশকারী পরিমাপই হলাে সমব্যবধান মাপক যেমন- সময়, থার্মোমিটার।

৪. অনুপাতভিত্তিক মাপক : ব্যক্তি বা বস্তুর কোনাে বৈশিষ্ট্যের পরিমাণকে অনুপাতে প্রকাশ করা যায়। যেমন- ঘড়ি, মন, সের ইত্যাদি

 

 

**নির্ভরযােগ্যতা কী?

অভীক্ষার নির্ভরযােগ্যতা : অভীক্ষার নির্ভরযােগ্যতা বলতে বুঝায় অভীক্ষাটি কত নিখুঁত বা নির্ভুল। সাধারণত যদি একটি অভীক্ষা একই অভীক্ষার্থী দলের উপর কিছুদিনের ব্যবধানে পর পর দু'বার প্রয়ােগ করা হয় এবং যদি দেখা যায় যে অভীক্ষার্থীদের এই দু'বারের স্কোরের মধ্যে বেশ মিল আছে তাহলে অভীক্ষাটিকে নির্ভরযােগ্য বলা হয়। সাধারণত দলটির এই দু'বারের স্কোরের মধ্যে মিল বা সমতা মাপা হয় সহপরিবর্তনের মান নির্ণয়ের দ্বারা। এছাড়া অন্যান্য পদ্ধতিতেও অভীক্ষাটির নির্ভরযােগ্যতা নির্ণয় করা হয়ে থাকে। গতানুগতিক পরীক্ষাগুলার এই দিক একেবারেই নির্ভরযােগ্য নয়।

গিলফোর্ড বলেন, কোনাে অভীক্ষার দু' বার প্রয়ােগের ফলে যে দু'প্রস্থ সাফল্যাঙ্ক পাওয়া যায় তাকে অভীক্ষার নির্ভরযােগ্যতা বলে।

**পরীক্ষণ পরিকল্পনার ধাপসমূহ : পরীক্ষণ পরিকল্পনার জন্য বিজ্ঞানী কতকগুলাে ধাপ অনুসরণ করেন, যা নিম্নে আলােচনা করা হলাে :

১.পরীক্ষণের নামকরণ:সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানী যখন একটি পরীক্ষণ পরিকল্পনার চিন্তাভাবনা করেন তখন তার কাছে যে বিষয়টি অতি জরুরি তা হলাে পরীক্ষণের নাম নির্বাচন।

২.ঐতিহাসিক পটডূমি: বিজ্ঞানীকে পরীক্ষণ পরিকল্পনার সময় সমস্যার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় আলােচনা ও পর্যালােচনা করতে হয়।

৩.সমস্যা নির্ণয়করণ: পরীক্ষণ পরিচালনার অন্যতম প্রধান ধাপ হলাে সমস্যা নির্ণয়করণ। পরীক্ষণের সমস্যা সম্পর্কে বিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে ধারণা অর্জন করে থাকেন।

৪.প্রকল্প প্রণয়ন: সমস্যার বর্ণনা করতে গিয়ে যেসব চল উল্লেখ করা হয় বা একাধিক যুক্তিযুক্ত উক্তির সাহায্যে

এসব চল এর সম্ভাব্য সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়। এরূপ উক্তিকেই বলা হয় প্রকল্প।

৫.চলের নিয়ন্ত্রণ: পরীক্ষণ পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলাে চলের নিয়ন্ত্রণ। চল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গবেষক সঠিকভাবে উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারেন।

৬.কার্যপ্রণালি:পরীক্ষণের ধাপের মূল বক্তব্য হলাে গবেষক কিভাবে পরীক্ষণ পরিচালনা করলেন তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করবেন।

৭.কার্যকরী সংজ্ঞা:পরীক্ষণে ব্যবহৃত বিভিন্ন চল সম্বন্ধে সুনির্দিষ্ট ধারণা থাকা প্রয়ােজন।গবেষক পরীক্ষণের প্রতিটি চলের কার্যকরী সংজ্ঞা প্রদান করবেন।

.চল শনাক্তকরণ: গবেষক পরীক্ষণের অনির্ভরশীল চল, নির্ভরশীন এবং অন্যান্য চলসমূহকে চিহ্নিত করবেন।

 

 

*****্যক্তিভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা ও দলগত বুদ্ধি অভীক্ষার মধ্যে পার্থক্য : নিম্নে ব্যক্তিভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা ও দলগত বুদ্ধি অভীক্ষার মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করা হলাে :

ব্যক্তিভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষা

দলগত বুদ্ধি অভীক্ষা

১. সময় : ব্যক্তিভিত্তিক বুদ্ধি অভীক্ষায় সময়ের পরিমাপ বেশি লাগে।

১. দলগত বুদ্ধি অভীক্ষায় সময়ের পরিমাপ কম লাগে ।

২. যােগাযােগ : অভীক্ষার্থীর সাথে অভীক্ষকের সরাসরি যােগাযােগ হয়।

২. এ ক্ষেত্রে যােগাযােগের সুযােগ নেই।

৩. ফলাফল : ফলাফল পেতে দেরি হয়।

৩. খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল পাওয়া যায় ।

৪. নির্ভরযােগ্যতা : ফলাফল খুব নির্ভরযােগ্য।

৪. ফলাফল নির্ভরযােগ্য নয়।

৫. নম্বর প্রদান : এতে নম্বর প্রদানের পদ্ধতি জটিল।

৫. নম্বর প্রদানের পদ্ধতি সহজ।

৬. পরিশ্রম : এতে অভীক্ষকের পরিশ্রম বেশি হয়।

৬. এতে অভীক্ষকের পরিশ্রম কম হয়।

৭. ব্যয় : এতে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি।

৭. এতে ব্যয়ের পরিমাণ কম।

৮. দক্ষতা : এতে অভীক্ষককে দক্ষ হতে হয়।

৮. এক্ষেত্রে দক্ষ না হলেও চলে।

 

 

Share:

No comments:

Post a Comment

slidebar

Total Pageviews

Abdullah Mondal

Powered by Blogger.

Blog Archive

Recent Posts

বাস্তবতা

জীবনের বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর। এটাই জীবন। জীবনের বাস্তবতার বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যতই নিষ্ঠুর হউক বা যতই কষ্ট হউক তা সয়ে নিতে হয়, মেনে নিতে হয় জীবনের প্রয়োজনেই। জীবনে কষ্ট আসলে মানসিক ভাকে যতটুকু ভেঙ্গে পড়বে জীবন তার দ্বিগুন পিছিয়ে যাবে। জীবনের সকল দূঃখ কষ্ট ও বাস্তবতাকে জীবনের অংশ হিসাবে মেনে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করার নামই হচ্ছে সুখ।

Pages